বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের ঝিকরগাছায় জব্দকৃত ৬টি ট্রাক মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন ইউএনও ভূপালী সরকার। এদিকে এই ঘটনায় গোপনে সাকিব আহম্মেদ জীবন নামের কথিত এক ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ৬০ হাজার টাকার ব্যাংক চেক নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঝিকরগাছা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিরা ট্রাকগুলো ছেড়ে দেয়ার বিপক্ষে প্রথমে অবস্থান নেয় এমনকি মামলার বাদী নিজেরা হবে বলে ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে তাদেরই এক ছাত্র প্রতিনিধি সাকিব আহম্মেদ জীবন উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের সাথে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকার চেক (নং-০৫৫৪১১০৯৯) নেন। যা ৮ জানুয়ারি বেসিক ব্যাংক ঝিকরগাছা শাখা থেকে সাকিব আহম্মেদ জীবনের এনআইডি কার্ড নং-৬৪৫৫২২১৫৫৩ চেকের সাথে জমা দিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে মর্মে তথ্য মিলেছে।
এছাড়া ৬০ হাজার টাকা উত্তোলনের একটি অডিও রের্কড ও টাকা উত্তোলনের তথ্য স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সাকিব আহম্মেদ জীবন। যা সংবাদকর্মীদের হেফাজতে রয়েছে।
এসব তথ্য প্রমাণ দেখে যশোর জেলা শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব আসলাম উদ্দিন রবিন সাংবাদিকদের বলেন, কথিত ওই ছাত্র তাদের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের) সাথে প্রতারণা করেছে।
চেক কেলেংকারী ফাঁস হওয়ার আগে ছাত্র প্রতিনিধিরা ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান ও ঝিকরগাছার সাংবাদ কর্মীদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ট্রাক ছেড়ে দিতে তদবির করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ তোলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার ৬ জানুয়ারী গভীররাতে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার কম্বল বিতরণ করে ফেরার পথে ঝিকরগাছা-বাঁকড়া আবুল ইসলাম সড়কের নারাঙ্গালী মোড় সড়ক থেকে অবৈধ ভাবে মাটি-বালি বহনের অভিযোগে ৬টি ট্রাক থানার পুলিশ জব্দ করেন। ঝিকরগাছা থানায় জায়গা সংকটের কারণে ট্রাকগুলো উপজেলা পরিষদ চত্বরে রাখা হয়। এবং পরবর্তীতে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূপালী সরকার বলেন, তিনি কারোরই সুপারিশ গ্রহণ করেননি। ডিসি স্যারের পরামর্শে ড্রাইভারদের মুচলেকা নিয়ে জব্দকৃত ৬টি ট্রাক ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে ট্রাকগুলো জব্দ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে রাখা হয়েছিল। বাদী পাওয়া না যাওয়ায় মামলা নিতে পারেনি। পরে ইউএনও স্যার মুচলেকা নিয়ে ট্রাক গুলো ছেড়ে দিয়েছেন।
ঝিকরগাছা পেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ট্রাক না ছাড়তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিরা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের বিপক্ষে কঠোর অবস্থানে ছিল। অথচ পরদিন কবির এন্টারপ্রাইজ থেকে দেয়া ৬০হাজার টাকার চেক নিয়েছে। এছাড়া ট্রাক ছাড়াতে থানা পুলিশ ও সাংবাদিকরা টাকা নিয়েছে মর্মে আঙ্গুল তুলেছিল। অথচ পরবর্তীতে ছাত্র প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেই টাকা নেয়ার সত্যতা মিলেছে। যা দুঃখজনক।