মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু, কেশবপুর
যশোরের কেশবপুরের জলাবদ্ধ এলাকায় গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জলাবদ্ধ এলাকার খামারি ও কৃষকরা। জলাবদ্ধতার কারণে বোরো আবাদ না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার সুফলকাটি, পাঁজিয়া, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার কৃষকরা বিচালির অভাবে গবাদি পশু পালনে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। গরু পালনে বাড়তি টাকা ব্যয়ে খামারিরা বিচালি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি অনেকেই বিলের পানি থেকে কচুরিপনা সংগ্রহ করে গরুকে খাওয়াচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার দুই হাজার ২৫৩ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সুফলকাটি ইউনিয়নে এক হাজার ২৭৪ হেক্টর, পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৬৫০ হেক্টর, গৌরীঘোনা ইউনিয়নে ৫১ হেক্টর, মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ১৮১ হেক্টর, কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ৯৪ হেক্টর, পৌরসভায় ৩ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ রয়েছে। এ সমস্ত জমিতে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষক।
সরেজমিন উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ডিঙ্গি নৌকায় করে জলাবদ্ধ বিলের পানি থেকে সীতা রানী সরকার (৪০) নামে এক গৃহবধূ গরুর খাবারের জন্য কচুরিপনা সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে গতবছর বিলে বোরো আবাদ হয়নি। ইতিমধ্যে বিচালিও ফুরিয়ে গেছে। বাড়ির ৫টি গরুকে খাওয়ানোর জন্য বাধ্য হয়েই কচুরিপনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এ বছরও বিলে পানি থৈ থৈ করছে। বোরো আবাদ করা সম্ভব হয়নি।
মনোহরনগর গ্রামের গৃহবধূ মান্দারী রায় (৩৭) বলেন, বাড়িতে ৩টি গরু রয়েছে। বিচালি কেনার মতো অবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়ে বিলের থেকে কচুরিপনা কেটে নিয়ে যাচ্ছি। গোখাদ্যের অভাবে গরুর স্বাস্থ্য টিকিয়ে রাখা হয়েছে দায়।
যশোরের হাশিমপুর থেকে আলমসাধুতে (স্থানীয় বাহন) মনোহরনগর গ্রামে বিচালি বিক্রি করতে এসেছেন রায়হান হোসেন (২৪) নামে একজন যুবক। তিনি বলেন, কেশবপুরের জলাবদ্ধ এলাকায় প্রতিদিনই যশোর থেকে বিচালি বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। এসব এলাকায় বিচালির চাহিদাও বেশি রয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জলাবদ্ধ এলাকায় গরুকে খাওয়ানোর জন্য বিচালির কিছুটা সংকট রয়েছে। তবে গবাদী পশু পালনকারীরা বাইরে থেকে বিচালি সংগ্রহ করে সংকট মোকাবেলা করে থাকেন।