বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী টেকেরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মণিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষ। দুই উপজেলাকে বিভক্ত করেছে টেকা (মুক্তেশ্বরী) নদী। যোগাযোগব্যবস্থা চালু রাখতে আশির দশকে অভয়নগরের টেকারঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। পুরনো সেতুটি ভেঙে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর একই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। খুলনা বিভাগীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৫৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়া এবং সেতুর উচ্চতা সমস্যা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ। সেই থেকে থমকে গেছে সেতুর নির্মাণকাজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ডসহ কোনো মালামাল সেখানে নেই। অসমাপ্ত সেতুর পাশে একটি কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে ছোট যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে। ভুক্তভোগী এলাকার বাসিন্দা ভবদহ মহাবিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল মতলেব বলেন, ‘আইনি জটিলতায় সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার মানুষ। কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। যে কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ চলছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর নির্মাণ সামগ্রীসহ অন্য মালপত্র লুট হয়ে যায়। আমাদের লোকজনকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।’
রিটকারী ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী কাজ শেষ করে রিপোর্ট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালতের দেওয়া সময় শেষ হয়ে গেছে। অথচ এলজিইডি কিছুই করেনি। যে কারণে দায় এড়াতে পারে না তারা। এখন এলজিইডি হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।’