সুমন ব্রহ্ম, ডুমুরিয়া
ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর আপার ভদ্রানদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তারপরও এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর দিয়েই চলছে পণ্যবোঝাই ভারি ট্রাকসহ যাত্রীবাহি যানবাহন। এতে করে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ব্রিজের নিচের কয়েকটি পিলারে ফাটল ধরেছে। উপরের রেলিংয়ে কোন প্লাস্টার নেই মরিচাযুক্ত লোহার রড বেরিয়ে রয়েছে। একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থা। এমনকি ব্রিজের উপরের সোলিং উঠে গেছে। সেখানে পাতানো রয়েছে ছোট এক টুকরো লোহার পাত। যে কারণে যে কোন সময় ব্রিজ ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছে স্থানীয় সচেতন মহল।
জানা যায়, ১৯৮৮ সালে ইউএসএইড’র সহযোগিতায় আমেরিকান সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডি জি রিলিফ ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে মাত্র ৫ টন মালামাল বহন ক্ষমতা সম্পন্ন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের প্রথম দিকে ব্যবহারে নিয়ম নীতি মানা হয়। পরবর্তীতে একই রাস্তায় শোলগাতিয়া ব্রিজ নির্মাণের পর থেকে পণ্যবাহি ভারি যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এদিকে খুলনার অন্যতম বাণিজ্যিক শহর চুকনগরের সাথে যশোরের শিল্প নগরী নওয়াপাড়া ও বেনাপোল বন্দরের সংযোগ স্থাপন করে ভদ্রা নদীর এই ব্রিজ। তখন থেকে এই ব্রিজের দিয়ে সার, সিমেন্ট, রড, বালি, চাল, ধান, ভোগ্য পণ্যবাহি ট্রাক, ড্রামট্রাক পিকআপসহ সকল ধরনের যানবাহন ৪০ থেকে ৫০ টন লোড নিয়ে যাতায়াত করছে।
ব্রিজের তলদেশে ফাঁটল নিয়ে কথা বললে তারা ব্রিজের করুণ অবস্থার বিষয়টি জানেন না বলেও জানান। তথ্য নিলে আরো জানা যায়, ব্রিজটির নাজুক অবস্থা হওয়ায় ২০১৮ সালে ব্রিজের দুই মাথার মাঝখানে বিপদ চিহৃ দিয়ে ব্রিজটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। যাতে ভারি যানবাহন চলাচল করতে না পারে। সময়ের ব্যাবধানে সেই চিহৃ পিলার হারিয়ে গেছে। এদিকে পরিত্যক্তের প্রায় ৬ বছর অতিবাহিত হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি কতৃপক্ষ। ব্রিজের অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার সাথে বিছিন্ন হওয়ার আশংকায় বাণিজ্যিক শহর চুকনগরসহ এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। অনেক ব্যবসায়ী নিরূপায় হয়ে অতিরিক্ত গাড়িভাড়া দিয়ে যশোর ও খুলনা হয়ে মালামাল বহন করে আনছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে চুকনগর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সরদার বিল্লাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের তলদেশে ফাটল ধরেছে, রেলিং নষ্ট হেয়েছে। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমি কতৃপক্ষের কাছে দ্রুত ব্রিজ নির্মণের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বাংলার ভোরকে বলেন ব্রিজটির অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে আমরা গিয়ে বাঁশ বেধে বন্ধ করে দিয়ে আসছিলাম। আবার কিছুদিন পর খুলে দিয়েছে। স্থানীয়রা সহযোগিতা করলে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। তাছাড়া যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

