বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ঘন্টা বেঁজেছে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের। ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ সংসদের ভোটগ্রহণ ও গণভোট। বহু কাক্সিক্ষত নির্বাচনের তফসিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একটি অভূতপূর্ব নির্বাচন হতে চলেছে। একই দিনে হবে গণভোট ও সাধারণ নির্বাচন। রক্তক্ষয়ী একটি গণঅভ্যুত্থানের পর এই নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা শঙ্কাও রয়েছে। ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে এই নতুন বাংলাদেশে আকাক্সক্ষা পূরণের এই নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছে যশোরের রাজনৈতিক দলগুলো। তফশিলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে বাংলার ভোরের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজনৈতিক দলের যশোরের নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক ব্যক্তিরা।

জনআকাক্সক্ষা পূরণের দিকে যাচ্ছে ইসি : সাবেরুল হক সাবু
ভোটাধিকার প্রয়োগে বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সক্ষ দীর্ঘদিনের। একটি সুষ্ঠু ও অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী আয়োজনে জনআকাক্সক্ষা পূরণের দিকে যাচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বলে মন্তব্য করেছেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা এই নির্বাচন নিয়ে।

নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান বিগত সরকার ধংস করেছিলো। সেই নির্বাচনে জনগণের মতামতের প্রতিফলন; সেটা ঘটতো না। সুষ্ঠু নির্বাচনী আকাক্সক্ষা জনগণ যে ধারণ করে; সেটিই নির্বাচন কমিশন সেটা পুরনের দিকে যাচ্ছে।

কতটুকু সফল হবে, সেটা নির্বাচনের পরেই বলা যাবে। এখন পর্যন্ত আমরা প্রত্যাশা করি, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হবে। আমরা নির্বাচনে সহিংসতা চাই না।

নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়; দেশের বৃহৎ ও গণতান্ত্রিক দল হিসাবে আমরা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবো।’

 

এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি : সাহাবুদ্দিন বিশ্বাস
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফশিলকে স্বাগত জানালেও এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে কমিশন তা তৈরি করবে।

একই সাথে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিবেশ তৈরি করবে। আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি।

আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরা বিজয়ী হবে। বিগত সরকারের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মানুষ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখেনি। যার ফলে দেশে নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে নতুন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে; সব ধরনের সংকট কাটাতে হলে নির্বাচন হতে হবে।

আমরা নির্বাচন চাই। আমরা নির্বাচন পিছানোর কোন কার্যক্রমে বিশ্বাসী না।’

 

সংশয় ছিলো নির্বাচন হবে কিনা : নুরুজ্জামান
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী নুরুজ্জামান বলেন, ‘এক ধরনের সংশয় ছিলো; নির্বাচন হবে কিনা নিয়ে।

যদিও বুধবার দুজন ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে পরিস্কার হয়ে যায়; নির্বাচনের রূপরেখা। তফশিল ঘোষণায় এনসিপির পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। আমরা এখন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এমনটা প্রত্যাশা করছি।

গণতান্ত্রিক উপায়ে যারাই ক্ষমতায় যাবে; দেশ জনগণকে ভাববে এমনটা প্রত্যাশা করছি। এখনো পর্যন্ত পেশিশক্তি, কালোটাকা, ভয়ভীতি প্রদর্শনের শঙ্কা সেটা রয়েছে। যদিও এটা নিয়ে আমরা প্রশাসনকে বারবার বলছি। এখন তফশিল হলো, নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব সেটা এই বিষয়ে দেখভাল করবে।’

 

বড়দলগুলোকে সহিংসতা রুখতে ভূমিকা নিতে হবে : আশিক ইকবাল
তফশিলের মধ্যে দিয়ে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।

সেই সাথে নির্বাচনী সহিংসতারও শঙ্কা রয়েছে।

সবধরনের নির্বাচনী সহিংসতা রুখতে বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদ খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল।

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন গণআকাক্সক্ষার নির্বাচন। বর্তমান কমিশনকে অব্যশই একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে হবে। অবশ্যই কমিশন রেফারির ভূমিকায় থাকবে। নিরপেক্ষ থাকবে। দেশে সবধরনের সংকট কাটাতে আমরা আশাবাদী অতীতের তুলনায় এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’

 

সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দেশে তফশিল ঘোষণা হয়েছে পাভেল চৌধুরি
টিআইবি যশোরের সভাপতি পাভেল চৌধুরি বলেন, ‘সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দেশে তফশিল ঘোষণা হয়েছে। এই সংকট কাটাতে হলে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প কিছু নাই।

নির্বাচনটা হওয়ায় দরকার। নির্বাচন যত দ্রুত হবে; দেশের সংকট দ্রুত নিরসনের দিকে যাবে। নির্বাচন যত স্বচ্ছ হবে; তত গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

শুধু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে হবে না; জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে।

অতীতে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, তাতে দলের অংশগ্রহণ কম ছিলো, জনগণের অংশগ্রহণ ছিলোই না। এবারে জনগণের অংশগ্রহণটা নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

 

 

ভোটকেন্দ্র যেন জনগণের হাতে ফিরে আসে : রাশেদ খান
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সাবেক আহ্বায়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির যশোর-৩ আসনের মনোনীত প্রার্থী রাশেদ খান বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশে আবারও একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সূচনা হলো।

নির্বাচন হলো জনগণের অধিকার, রাষ্ট্রক্ষমতার ওপর জনতার চূড়ান্ত কতৃত্ব। কিন্তু বিগত কয়েকটি নির্বাচনে যে বৈষম্য, অপসংস্কৃতি ও গণতন্ত্রহীনতা সৃষ্টি হয়েছে, তা আজও দূর হয়নি।

আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র অর্থ শুধু নির্বাচন নয়, স্বাধীন প্রশাসন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, ভীতি-হয়রানি-মুক্ত পরিবেশ, সমান প্রচারের অধিকার এবং জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা।

আমি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির যশোর-৩ আসনের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চাই ভোটকেন্দ্র যেন জনগণের হাতে ফিরে আসে, সকল প্রকার দলীয় নিয়ন্ত্রণ, কালো টাকার ছড়াছড়ি ও সন্ত্রাসী ও সহিংস কার্যক্রম থেকে মুক্ত হয়।

Share.
Exit mobile version