বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বাঙালি সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীদের শারদীয় উৎসবে দুর্গাপূজার আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন মহাদুর্গা সপ্তমী তিথি। শাস্ত্রীয় মতে মাঙ্গলিক নানা ক্রিয়া সম্পন্ন করে বুধবার সকালে মহা দুর্গাষষ্ঠী তিথিতে শ্রীশ্রী দেবী দুর্গাকে মর্তে আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পন্ন হয়েছে। সপ্তমী তিথীর সকালে পূজা স্থলে কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মান ও ধান উদ্ভিদের সমন্বয়ে নবপত্রিকা প্রচলিত ভাষায় কলা বৌ প্রবেশের মধ্য দিয়ে দেবীর পূজা শুরু হবে। যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম সূত্রে জানা গেছে, শ্রীশ্রী মহাসপ্তমী ভোর ৬টা ১০ মিনিটে পূজার কল্পারম্ভ।
উল্লেখ্য, নবপত্রিকার নয়টি উদ্ভিদ আসলে দেবী দুর্গার নয়টি বিশেষ রূপের প্রতীকরূপে কল্পিত হয়। এই নয় দেবী হলেন রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী। এই নয় দেবী একত্রে ‘নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা’ নামে ‘নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ’ মন্ত্রে পূজিতা হবেন।
ভক্তবৃন্দ দুর্গতিনাশিনী শ্রীশ্রী দেবী দুর্গার কমল চরণে নিবেদন করবেন পুষ্পাঞ্জলি। সুখ-সমৃদ্ধি কামনায় সমাগত পুণ্যার্থীবৃন্দের কণ্ঠে সমস্বরে উচ্চারিত হবে শান্তি মন্ত্র।
দিনব্যাপী মন্দির-মণ্ডপ প্রাঙ্গণে চলবে পূজার্চনা, ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলি চণ্ডীপাঠ। বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে প্রতিটি মন্দির ও মণ্ডপ প্রাঙ্গণ পরিণত হবে মহা তীর্থে। সন্ধ্যায় আলোক ঝলমল পরিবেশে হবে মঙ্গল আরতি।
মহাসপ্তমীর এদিন মন্দির-মণ্ডপে শাস্ত্রবিধি অনুযায়ী নবপত্রিকাকে স্নান করানোর পর নতুন শাড়ি পরিয়ে মূল পূজা স্থলে এনে দেবী দুর্গার ডান দিকে একটি কাঠের সিংহাসনে স্থাপন করা হবে। পূজা স্থলে নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে সহস্র ছিদ্র জলাধার দিয়ে মহাস্নান করানো হবে। এরপর সাজ-সজ্জা প্রদানপূর্বক ভোগ আরতি ও ভক্তবৃন্দের অঞ্জলি প্রদান শেষে প্রসাদ বিতরণ করার রীতি রয়েছে। পূজার অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল আরতি।
আগামীকাল ১১ অক্টোবর সকালে মহা অষ্টমী; যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রমে কুমারী পূজা সকাল সাড়ে ১০টায়। এদিন সন্ধি পূজা দুপুর ১২টা ১৩ মিনিট থেকে দুপুর ১ টা ১ মিনিট পর্যন্ত। ১২ অক্টোবর সকালে মহানবমী পূজা কল্পারম্ভ এবং ১৩ অক্টোবর সকালে মহাদশমী কল্পারম্ভ- পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন সকাল ৯ টা ৩৯ মিনিটের মধ্যে। এই বছর দেবী দুর্গার আগমন দোলায়, যার ফল মড়ক এবং কৈলাসে ফিরে যাবেন ঘোটকে, যার ফল ছত্রভঙ্গ।