বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট দেশ বিরোধী অপশক্তিকে বিদায় করার পর আমরা নতুন সূর্যোদয়ের আকাক্সক্ষা এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স¦প্নকে চুরমার করার জন্য দেশ বিরোধী একটি অপছায়া দেশের ওপর পাখা মেলছে। দেশ বিরোধী অপশক্তি এবং তাদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে নতুন করে শপথ নিতে হবে। নিজেদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে।
ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অধ্যাপক নার্গিস বেগম আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষা দেয়ার অঙ্গীকার এবং দেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করার ব্রত নিয়ে আমরা বিএনপির রাজনীতি করি। আমাদের সামনে শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেতৃত্ব এবং আদর্শ রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি সংকটে সমস্যা অত্যান্ত শক্তভাবে মোকাবেলা।
তিনি বলেন, এই দেশ বারবার সংকটে পড়েছে। কিন্তু ইতিহাস বলে প্রতিটি সংকটে দেশের সাধারণ মানুষ ঢাল হয়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি অপশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে বিজয় অর্জন করেছে। সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আবারও দেশে বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আকাক্সক্ষার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। সেই বাংলাদেশ গড়ার একটি মাত্র উপায় সমগ্র দেশে ধানের শীষের জোয়ার সৃষ্টি করতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে দেশ রক্ষার প্রতীক ধানের শীষে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে। জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের এবং বেগম খালেদা জিয়ার অসামান্য ত্যাগের বাংলাদেশকে নতুন ভাবে গড়তে হবে। তার জন্য সকলে বিভেদ ভুলে রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে সময়ে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে দুর্বল করতে ষড়যন্ত্র বর্তমান। এই ষড়যন্ত্র মোকবেলায় নতুন করে জিয়াউর রহমানের সৈনিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শপথ নিতে হবে। ঠিক যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চব্বিশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং আশির দশকে স্বৈরচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছি। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রয়োজনে এবং জনগণের কাক্সিক্ষত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাহসিকতার গৌরবজ্জ্বল ভূমিকার কারণে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার অভিপ্রায়ে বিকল্প নেতৃত্ব এবং ব্যক্তিকে খুঁজে না পাওয়ার কারণে সিপাহী জনতা তাকে মুক্ত করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসীন করেন। একজন সামরিক কর্মকর্তা হয়েও তিনি উপলদ্ধি করেছিলেন একটি দেশ গণতন্ত্রহীন থাকতে পারে না। তিনি সামরিক শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্র কায়েম করার জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা করলেন। যেই নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ মুজিবের হাতে বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিল। আজকে যারা ভারতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করেছে, জিয়াউর রহমানের আনুকূল্য এবং করুণা নিয়ে তারা সেদিন দেশে ফেরত আসার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু তাদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। স্বাধীনতার আগে পরে বারবার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্র হয়েছে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে। কারণ বাংলাদেশের ভাগ্যের সাথে জিয়া পরিবারের ভাগ্য অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিএনপির একটি কর্মী বেঁচে থাকতে দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা যাবে না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নজরুল ইসলাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম।

