সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
সাতক্ষীরা শহরের পানি নিস্কাসনের একমাত্র মাধ্যম প্রাণ সায়ের খালটি এখন প্রাণ হারিয়ে শহরের সবচেয়ে বড় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত নিয়েছে। যৌবন হারানো খালটিতে ইচ্ছামতো ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। দখল আর দূষণে খালটি এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। পচা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচার তাগিদে নাক চেপে কোনরকমে খাল পাড়ের রাস্তা দিয়ে চলাচল করে পথচারীরা। সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রাণ সায়ের খালের পাশ দিয়ে যেসব স্থায়ী, অস্থায়ী দোকানপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেসব দোকানসহ আশেপাশের উচ্ছিষ্ট ময়লা আবর্জনা হরহামেশাই ফেলা হচ্ছে খালটিতে। ফলে এসব ময়লা-আবর্জনায় খালের পানি পচে কালো হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তাছাড়া প্রাণহীন প্রাণ সায়ের খালটি মশা উৎপাদনের কারখানায় রুপ নেয়ায় শহরবাসীকে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৮৫০ সালের দিকে সাতক্ষীরার জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা ও শহরের শ্রীবৃদ্ধির জন্য খালটি খনন করেন। তীব্র খরস্রোতা মরিচ্চাপ নদীর সঙ্গে বেতনা নদীর সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার জন্য সাতক্ষীরা শহরের ওপর দিয়ে ১৪ কিলোমিটার এ খাল খনন করে সংযোগ দেয়া হয়। জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরীর নাম অনুসারে খালটির নামকরণ করা হয় প্রাণ সায়ের খাল।
খাল পাড়ের রাস্তার পথচারী আ. রাজ্জাক বলেন, প্রতিদিন খালপাড়ের এ সড়ক দিয়ে শতশত মানুষ চলাচল করে। কিন্তু প্রচণ্ড দুর্গন্ধে তাদের নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হয়। খালের আশপাশের বাসিন্দারা ছাড়াও বড় বাজারের ব্যবসায়ীসহ ও অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ময়লা ও আবর্জনা ফেলে দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। এতে সাতক্ষীরা শহরের পরিবেশ অনেক দূষিত হয়ে পড়ছে। শহরের পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান প্রাণ সায়ের খালকে যারা ভাগাড়ে পরিণত করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এখন সময়ের দাবি বলে মনে করি। সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, মানুষ যাতে খালটিতে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে সেজন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কেউ শুনছে না।
মেহেদী হাসান বলেন গত কয়েক দশক ধরে এ খালটির অব্যহত দখল দুষনে বর্তমানে ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে খালটি ভরাট হয়ে পানি নিস্কাসন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে শহরবাসী বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় শিকার হওয়ার পাশাপাশি সাতক্ষীরা শহরে মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে। সচেতন সাতক্ষীরাবাসী অবিলম্বে প্রাণ সায়ের খালটি রক্ষা করতে যথাযথ বাস্তব সম্মত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির দৈনিক বাংলার ভোরকে বলেন প্রাণসায়ের খালে আবর্জনা ফেলা নিষেধ তারপরও যদি কেউ ভেলে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।