বেনাপোল প্রতিনিধি

বন্দরে এক মাস ধরে পড়ে আছে মালিকানার দাবিদারহীন ভারতীয় পণ্যবাহী একটি ট্রাক। বেনাপোল স্থল বন্দরে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে পড়ে ট্রাকটি পড়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত পণ্য খালাসে কোনো সিএন্ডএফ এজেন্ট কাগজপত্র দাখিল না করায় পণ্যবাহী ট্রাকটি নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

আজ (বুধবার) বেনাপোল স্থলবন্দরের ৩৬ নম্বর শেডের সামনে সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা কর্মীদের নজরদারিতে ট্রাকটি দেখা যায়।

জানা যায়, ট্রাকের মধ্যে ৫১১ কার্টন আইপিএস ও ইউপিএস থাকার ঘোষণা থাকলেও আদৌ তাতে কোন ধরনের পণ্য আছে, তা নিশ্চিত হতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এত দিনেও চালনটির মালিকানা দাবি করেনি কেউ। এমনকি পণ্য খালাসে আমদানিকারকের পক্ষে কোনো সিএন্ডএফ এজেন্ট কাগজপত্র কাস্টমসে দাখিল না করায় এর মালিকানা সম্পর্কে কিছুই নিশ্চিত হতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রাকটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাস্টমসকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ট্রাকটি বন্দরের ৩৬ নম্বর পণ্যাগারের সামনে সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, একটি মহল বড় ধরনের অনিয়ম বা শুল্ক ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছিল।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে সাধারণত একজন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি ট্রাকটি গ্রহণ করে কাস্টমস কার্গো শাখায় তার তথ্য এন্ট্রি করে। পরে বন্দরের রেজিস্ট্রারে পণ্যাগারের নাম উল্লেখ করে সেই পণ্যাগারে পণ্য খালাস করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে (ডব্লিউবি-১১-বি- ৬৩৬৬) নম্বরের ট্রাকটি নিয়ম না মেনে বন্দরের ৩৬ নম্বর পণ্যাগারের সামনে অবস্থান করে।

এর মধ্যে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর যায়, ট্রাকটি আমদানি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বা বড় ধরনের অনিয়ম করার চেষ্টা করছে। এরপর থেকে ট্রাকটি সিসি ক্যামেরা ও বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে রাখা হয়। তবে এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পণ্যের এ চালানের কেউ মালিকানা দাবি করেনি। এদিকে ট্রাকে কী রয়েছে, তা এখন পর্যন্ত কোনো সংস্থা খুলে না দেখায় তা নিয়ে বন্দরে কাজ করা সাধারণ শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কৌতুহল ও ভীতি বিরাজ করছে।

বেনাপোল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল সিরাজী বলেন, পণ্যবাহী ট্রাকটির আমদানিকারক ঢাকার টিআর অটোমোবাইলস। ট্রাকটিতে ৫১১ কার্টন আইপিএস ও ইউপিএস ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ চালানটির মালিকানা দাবি করেনি। পরবর্তী পদক্ষেপ না নেয়া পর্যন্ত পণ্যটি যেন খালাস বা সরিয়ে না নেয়া হয় সেজন্য বন্দরের সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাকর্মীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ট্রাকটি বন্দরে কোথাও এন্ট্রি না করে প্রবেশ করে। ট্রাকটিতে কী আছে এখন পর্যন্ত খুলে দেখা হয়নি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দরের হেফাজতে ট্রাকটি রেখেছে। ট্রাকটির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য কাস্টমসকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বন্দরের নিয়ম অনুযায়ী, এক মাসের মধ্যে পণ্যের চালান বন্দর থেকে খালাস না হলে তা নিলামের তালিকায় তোলা হয়। তখন বন্দর কর্তৃপক্ষ তালিকা দিলে কাস্টমস সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।

Share.
Exit mobile version