বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আমন ধান ঘরে তুলেছে কৃষক। ফাঁকা পড়ে আছে ধানক্ষেতের মাঠ। আশপাশের জমিতে দুলছে হলুদ সরিষা ফুল। কৃষকের পতিত ধান ক্ষেতের একপ্রান্তে তৈরি করা হয়েছে সভামঞ্চ। সামনের দর্শক সারিতে রয়েছে কৃষক-জনতার বসার ব্যবস্থা। সমাবেশ উপলক্ষে রাস্তার ধারে বসেছে গ্রামীণ মেলা। এলাকার কৃষাণ-কৃষাণীদের মাঝে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে গেছে। গ্রামের মেঠে পথ দিয়ে সুসজ্জিত গরুর গাড়ি চড়ে, কেউবা জমির আইল ধরে লাঙ্গল, জোয়াল, মাথালি, কাঁচি হাতে যোগ দিচ্ছেন সমাবেশে। দুপুর গড়াতে গড়াতে সভাস্থলে ঢল নেমেছে কয়েক হাজার নারী, পুরুষ, শিশুর। সব বয়সী মানুষের অধীর অপেক্ষা সমাবেশের বক্তাদের কথা শোনার। পড়ন্ত বিকেলে সমাবেশে বক্তব্য রাখলেন বিএনপি ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছে দিলেন তারা। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষ হতে হতে সূর্যাস্তে সাথে সাথে সাঙ্গ হয় মিলনমেলা। বলছিলাম সোমবার বিকেলে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া ইউনিয়নের ভিটাবল্লা-সাইটখালি মাঠে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত কৃষক সমাবেশের কথা।
কৃষিনির্ভর বাংলাদেশ এবং কৃষি রফতানি নির্ভর বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমানের ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’ বার্তাটি কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দিতেই কৃষকের ক্ষেতেই আয়োজন করা হয়েছে কৃষক সমাবেশ। সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয় এবং কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভবনার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। তিনি বলেন, ‘দেশে একমাত্র সরকারই হলো বিএনপি, যারা কৃষকদের নিয়ে ভাবে। কৃষকদের তাদের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য দামের অভাবে ফেলে দেয়া লাগবে না! বিএনপি ক্ষমতায় এলে জাতীয় বাজেটের ৮ শতাংশ কৃষি খাতে বরাদ্দ দেয়া হবে। এটা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে পরিকল্পনা। বিএনপি ক্ষমতায় এলে কৃষকের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা নেয়া হবে; যাতে সারা বছরই কৃষকদের মুখে হাসি থাকে। ফসলের নায্যমূল্য বিক্রয়ের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র খোলা হবে। ঝড় বৃষ্টিসহ নানা কারণে ফসল নষ্ট হলে শয্য বিমা চালু করা হবে। কৃষক তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য বিমা কার্ডের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে তারেক রহমান। তিনি বলেন, পতিত শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দেশে কৃষকের কোনো মূল্য ছিল না। তারা তাদের কষ্টার্জিত ফসলের মূল্য পায়নি। বরং দেশের দুই তৃতীয়াংশ খেটে খাওয়া মানুষকে বিনা কারণে জেলে যেতে হয়েছে। পুলিশ ও আদালতে টাকা খরচ করতে করতে নিঃস্ব হতে হয়েছে। সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনে দেশকে রক্ষা করতে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিতের জন্য সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
জামদিয়া ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি শামসুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর-৪ আসনের (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূব, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ওসমান আলী, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা কৃষক দলের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মশিউল আজম প্রমুখ।