বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের বেনাপোল ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটি করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনাও ঘটে। তবে, কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। রোববার বিকেল ৩টার দিকে বেনাপোল বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে দুপুর ২টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান শান্তিকে জিম্মি করে পাল্টা ম্যানেজিং কমিটির সাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তির অনুসারিদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে সীমান্তশহর বেনাপোলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বেনাপোল ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল কামরুজ্জামান শান্তি বলেন, সরকার পতনের পর আমাদের পুর্বের কমিটি বিলুপ্তি করে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। অস্থায়ীভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এরপর নতুন কমিটির জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও উৎসাহী ব্যক্তিদের তিনজন করে নাম পাঠাতে বলে। আমরা কলেজের সকল শিক্ষক বসে একটি টিম গঠন করি। সেখানে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি নুরুজ্জামান লিটনের নাম উত্থাপন করে। এর কয়েকদিন পর অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নুরুজ্জামান লিটনকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে তার লোকজন একটি ফরোয়ার্ডিং নিয়ে যায় কলেজ থেকে। এর কয়েকদিন পর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তির অনুসারি বেনাপোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মিলন, পৌর বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিন আহমেদ কলেজে আসেন। তারা লিটনকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে সভাপতি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এরপর মিলন বার বার তাকে ফোন করে লিটনকে বাদ দিয়ে অন্য নাম দিয়ে ফরোয়ার্ডিং করতে বলে।
রোববার দুপুরে কলেজ চলাকালীন তার নেতৃত্বে কয়েকজন এসে আমাকে শার্শা উপজেলা বিএনপি সভাপতি খায়রুজ্জামান মধুর আবেদন ফরোয়ার্ডিং করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাতে বলে। আমি তাদের বুঝাতে চেষ্টা করি একবার কারো নাম দিলে দ্বিতীয়বার আর দেয়া যায় না। এসময় মিলন উত্তেজিত হয়ে আমাকে অন্যান্য শিক্ষকের সামনে মারতে যায় এবং গালিগালাজ করে। এরপর জোরপূর্বক সে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে খায়রুজ্জামান মধুর পক্ষে ফরোয়ার্ডিং করে নিয়ে যায়।
বেনাপোল বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, একটি মিছিল যাওয়ার সময় অন্য একটি গ্রুপ এসে তাদের ধাওয়া করে। এবং পর পর ৩/৪ টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। বোমা বিস্ফোরণ ও লাঠিসোঠার ভয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি করে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে।
এ বিষয় বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়া বলেন, কলেজ কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। প্রভাব বিস্তার করতে একটি পক্ষ বাজারে বোমা সদৃশ্য বাজি ফুটিয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। হুমকির ঘটনায় কেউ মামলা করেনি। তবে মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।