বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ৬০ হাজার টাকা মূল্যের রেন্ট্র্রি গাছ চুরি নিয়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মধ্যে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে গাছ বিক্রি করে তা ধরা পড়ার পর নিজে বাঁচার জন্য ক্রেতা দু’জনকে বলি দিতে করা হয়নি কোন দ্বিধা। তাছাড়া, গাছের মূল অংশ হাতে পেয়েও তা উদ্ধারে তেমন কোন ভূমিকা না রাখায় সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যের। এমনকি যে পদমর্যাদা ব্যবহার করে বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে তেমন পদ জেলা পরিষদে আছে কিনা সেটি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানেন না। তবে গাছ চুরির বিষয় দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা পরিষদর কর্মচারি সূত্রে জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি-তালবাড়ীয়া পাকা সড়কের পাশে তরফ নওয়াপাড়া মৌজায় যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সড়কের বড় ধরনের একটি রেন্ট্রিগাছ চুরি করে কাটা হচ্ছে জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ওই দিন বিকাল ৩ টায় জেলা পরিষদের বৃক্ষ সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারি দাবিদার আশরাফ হোসেনসহ জেলা পরিষদের চারজন ঘটনাস্থলে যান। সেখানে যাওয়ার পর বাদী জানতে পারেন সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের ইব্রাহীম বিশ^াসের কাছ থেকে একই গ্রামের আশরাফুল ইসলাম রেন্ট্রি গাছটি ৪০ হাজার টাকায় কিনেছেন। বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, তিনি ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই রেন্ট্রি গাছটির মূল্যবান বড় বড় ডাল ও জ¦ালানী অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
অবৈধভাবে ও প্রকাশ্যে চুরি করে কাটা রেন্ট্রি গাছটির মূল গুড়ি, লগ ঘটনাস্থলে পড়ে থাকায় বাদী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আছাদুজ্জামানকে না জানিয়ে জেলা পরিষদ ভবনে না এনে ঘটনাস্থলের আশপাশে স্থানীয় লোকজনের জিম্মায় প্রদানের চেষ্টা করলেও আসামিদের ভয়ে কেউ জিম্মা গ্রহণ করেননি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। অথচ জেলা পরিষদের একজন কর্মচারির বাড়ি ঘটনা স্থলের অদূরে। সূত্রগুলো বলছেন, বাদী জেলা পরিষদের একজন ইলেকট্রিশিয়ান। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, সার্ভেয়ার আল আমিন ও জেলা পরিষদের দারোয়ান কাম-কেয়ার টেকার আসাদুল ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে অন্য দু’জন কাউকে বাদী না করে ইলেট্রিশিয়ান আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। কোতয়ালি থানার মামলা নং ৩০, তারিখ ১০/০৯/২৪ ইং ধারা ৩৭৯/৪২৭ পেনাল কোড। ওই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার এসআই অনুপ কুমার দাস। মামলা হওয়ার পর ২৪ ঘন্টায়ও আসামি ইব্রাহিম বিশ^াস ও আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তা অনুপ কুমার দাস।
তাছাড়া, গাছটির গুড়ি ও লগ ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ কাজের সাথে জেলা পরিষদের কেউ জড়িত নইলে গাছের মূল অংশ ঘটনাস্থলে থাকলেও উদ্ধার করে হেফাজতে না আনায় ঘটনার ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। রেন্ট্রি গাছ চুরি সংক্রান্ত ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রাধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছ চুরি সংক্রান্ত ব্যাপারে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত লুৎফর রহমানকে সদস্য করে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দেয়ার পর জেলা পরিষদের কেউ গাছ চুরির সাথে জড়িত কিনা প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।