বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ডিবি পুলিশ ব্লাকমেইল চক্রের নয় সদশ্যকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে তিনজন রয়েছেন নারী। পুরুষেরা নারীদের দিয়ে মানুষের সাথে প্রথমে সম্পর্ক স্থাপন করায়। এরপর অজুহাতে ডেকে এনে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ এবং চাঁদাদাবি করে। এমন চক্রের হাতে পড়েছিলেন মাগুরার দুই যুবক। পরে তারা ডিবি পুলিশকে জানালে ডিবির এসআই মামুনের নেতৃত্বে একটি টিম শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন, দুইটি মোটরসাইকেল ও নগদ ১০ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলেন, ঘোপ বেলতলা এলাকার বাবুল হোসেনের ছেলে শিমুল হোসেন, ঝিকরগাছা উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের পিয়াস রহমান, যশোর শহরের বেলতলা এলাকার শিশির হোসেন, জোতরহিমপুর গ্রামের তুহিন হোসেন, শেখহাটি মুন্সিপাড়ার আশিকুর রহমান তুহিন, শেখহাটি মোল্লাপাড়ার রাশেদুল ইসলাম, জোতরহিমপুরের তুহিন হোসেনের স্ত্রী সোনালী খাতুন, একই গ্রামের মন্টু বিশ্বাসের মেয়ে জান্নাত আক্তার রজিনা ওরফে রিয়া ও খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার ঘাটভোগ গ্রামের কামাল হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল আক্তার সুরমা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার পূর্ব শ্রীকোল গ্রামের নান্নু মোল্লা বাদী হয়ে আটক নয়জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, তিনি ও তার প্রতিবেশী কাজী রহমত উল্লাহ গত ৬ জানুয়ারি ব্যবসায়িক কাজে মোটরসাইকেলে যশোরে যান। এ সময় কথা হয় পূর্বপরিচিত জান্নাতুল আক্তার সুরমার সাথে। রাত নয়টায় সুরমা তাদেরকে যশোর নিউমার্কেট এলাকায় যেতে বলেন। সেখানে তারা গেলে আসামিদের কয়েকজন তাদেরকে এফ ব্লকের আট নাম্বার সেক্টরের এইচ ১১ নাম্বার প্লটে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর হঠাৎ তাদেরকে মারধর শুরু করে। রাত ১১ টার পর সুরমাকে তাদের পাশে রেখে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
এরপর তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসামিরা। রাত ২টায় বিকাশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা আসামিদের হাতে দেয়া হয়। এরপর পরের দিন দুপুর তিনটা পর্যন্ত তাদেরকে মারধর ও নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায় আসামিরা। শেষমেষ তাদের মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে একটি ফাঁকা মাঠের মধ্যে দুইজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে নান্নু ও রহমতুল্লা বাড়ি ফিরে যান। গত ৮ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে ডিবির কাছে অভিযোগ করেন নান্নু। এরপর ডিবির এসআই মামুন তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অবস্থান নির্ণয় করে শহরের কুইন্স হাসপাতালের সামনে থেকে শিমুল হোসেন, পিয়াস রহমান ও শিশির হোসেনকে আটক করে। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে সোনালী খাতুন, জান্নাত আক্তার রজিনা, জান্নাতুল আক্তার সুরমা, তুহিন হোসেন, আশিকুনা রহমান তুহিন এবং রাশেদুল ইসলামকে আটক করে ও মালামাল উদ্ধার করে।
এদিকে, ডিবি পুলিশ জানায় চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে ব্লাক মেইল করে অর্থআত্মসাতের কাজে লিপ্ত রয়েছেন। এ চক্রের আরও সদস্য রয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।