বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ক্যাম্পাসের আবাসিক হলে থাকা শাহরীন রহমান নামে এক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রক্টর অধ্যাপক হাফিজ উদ্দীনকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এরপর আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অবগত। কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্খা নেয়া হবে।’
মঙ্গলবার গভীর রাতে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার কক্ষে শিক্ষার্থী নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে। রাতভর নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম শাহরীন রহমান প্রলয় (২৪)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রাবাসের বাসিন্দা।
জানা যায়, গত ৩ জুন সোমবার ক্যাম্পাসে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে শাহরীনকে মারধর করেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান ২০২৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী হিসেবে পরিচিত শাহীনুর রহমান। এই ঘটনায় শাহীনুরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দেন শাহরীন। ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে ছাত্রাবাসে ঘুমিয়ে থাকা শাহরীনকে ডেকে তুলে ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষে নিয়ে যায়।
এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তার কয়েকজন অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতি সোহেল রানার কক্ষে নিয়ে গিয়ে শাহরীনকে এলোপাতাড়ি মারধর ও রড দিয়ে পিটানো হয়। রাত দুইটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছে দাবি করেন ওই শিক্ষার্থী। এর পর ঘটনাটি যাতে ভুক্তভোগী কাউকে জানাতে না পারে সে কারণে শাহরীন ও তার কক্ষের সহপাঠী আমিনুল ইসলামের ফোন কেড়ে নেয় অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে ঘটনা জানাজানির ভয়ে বুধবার সকালে মোটরসাইকেলে করে কালীগঞ্জ বারোবাজার গ্রামের বাড়ি চলে যান তিনি। দুপুরে শাহরীনের মায়ের মুঠোফোনে বিষয়টি যাতে কাউকে না জানানো হয় বলে হুমকি দেয়া হয় অজ্ঞাত নাম্বার থেকে। এমনকি এই বিষয়ে কাউকে জানালে বাড়িতে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয় দৃবৃর্ত্তরা।