বিবি প্রতিবেদক
যশোরে একটি গণধর্ষণ মামলায় আসামির পক্ষ নিয়ে কাজ করতে না পেরে চরমপন্থী পরিচয়ে আদালতে উড়ো চিঠি দেয়ার অভিযোগে আইনজীবীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই মফিকুল ইসলাম ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
গতকাল তিনজনই ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ জবানবন্দি শেষে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আটকরা হলেন, বাঘারপাড়া উপজেলার বল্লামুখ গ্রামের বাসিন্দা এবং যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের বাড়ির ভাড়াটিয়া এ্যাডভোকেট নবকুমার কুন্ডু, পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার রবিউল ইসলাম রুবেল ও ষষ্ঠীতলাপাড়া বাদল দাসের বাড়ির ভাড়াটিয়া মিহির কুমার সাহা।
এসআই মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ২০২৩ সালের ২৫ মে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে একটি মেয়েকে চারজনে গণধর্ষণ করে। এই ঘটনার মামলায় চার জনই পুলিশের হাতে আটক হয়। একজনের জামিন হলেও অন্য তিনজন এখনো কারাগারে রয়েছে। মামলাটি প্রথমে আবুল হোসেন নামে এক আইনজীবী আসামিদের পক্ষে দেখভাল করছিলেন। পরবর্তীতে মামলাটি হাতে নেয়ার জন্য নানান কলাকৌশল অবলম্বন করে এ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত মামলাটি হাতে নিতে পারেননি। বর্তমানে মামলাটিতে আসামিদের পক্ষে কাজ করছেন এ্যাডভোকেট চিত্ত রঞ্জন। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও মামলাটি হাতে না পেয়ে নানা ধরনের অপকৌশল অবলম্বন শুরু করে এ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি যশোর সিভিল কোর্ট মোড়ে মেসার্স ভাই ভাই ফটোস্ট্যাট নামক দোকানে যান নব কুমার কুন্ডু। এ সময় নিজেকে নজরুল ইসলাম নাম দিয়ে চরমপন্থী দল বিপ্লবী কমিউন্টি পার্টির সদস্য বলে পরিচয় দেন। আদালতের বিচারককে উদ্দেশ্য করে ওই দোকানের কর্মচারী মিহির কুমার সাহা একটি চিঠি কম্পোজ করে দেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি ক্রিমিনাল মিস ২৯/২৪ এর ধার্য তারিখ। ওই দিনে আসামিদের জামিন দিয়ে দেবেন। অন্যথায় আপনার জীবন শেষ করে দেয়া হবে। এই চিঠি পেয়ে বিষয়টি যশোর আদালত পাড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলামকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দায়িত্ব দেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত করে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সনাক্ত করে গত বুধবার গভীর রাতে যশোর শহরের পুরাতন কসবা এলাকার বাসা থেকে প্রথমেই রবিউল ইসলাম রুবেলকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিহির কুমার সাহাকে ও আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে আটক করা হয় এ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডকে। এদিনই থানায় মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছেন, গণধর্ষণ মামলাটির আইনজীবী নিযুক্ত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন এ্যাডভোকেট নব কুমার কুন্ডু। দ্বিতীয় দফায় আইনজীবী পরিবর্তন করতে গিয়ে না পেয়ে ২৭ জানুয়ারি মিহির কুমারকে দিয়ে কম্পোজ করে রুবেলের মাধ্যমে যশোর পোস্ট অফিস থেকে ডাকযোগে আদালতে পাঠাতে বলা হয়। রুবেল পোস্ট অফিসে গেলে এ্যাডভোকেট নব কুমারের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেন। তাই ঘটনার সূত্র ধরেই ওই তিনজনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এই ব্যাপারে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান শাহিন বলেছেন, বিষয়টি তারা জেনেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিরোনাম:
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়
- ‘জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না’
- পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প কোচ সংকটে শিগগিরই চালু হচ্ছে না ট্রেন চলাচল
- শব্দ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী; যশোরে তিনদিনের নাট্য উৎসব হবে
- অভয়নগরে রবিউল হত্যা ওয়াহিদুলের রিমান্ড মঞ্জুর
- যশোর চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মিজান খান ও সম্পাদক সোহান নির্বাচিত
- কেশবপুরে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কুরআন ধরানো অনুষ্ঠান ও পরিচিত সভা