বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষ্যে যশোরে ৯ নারীকে জয়িতা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা পর্যায়ের ৫জন ও সদর উপজেলার ৪ নারীকে জয়িতা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. রফিকুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমাইয়া হাসান ঝুমকা, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান, জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সাধন কুমার দাস, অবসরপ্রাপ্ত স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক একেএম শফিউল আজম প্রমুখ।
এ বছর পাঁচ ক্যাটাগরিতে জেলার শ্রেষ্ঠ ৫ জয়িতাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। তারা হলেন, অর্থনীতিতে সাফল্য অর্জনে চম্পা বেগম, শিক্ষা ও চাকুরিতে সাফল্য অর্জনে টুম্পা সাহা, সফল জননী কল্পনা খাতুন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে সফল সাবিনা ইয়াসমিন ও সমাজ উন্নয়নে অবদানে মাসুমা মিম। অপরদিকে, বিভিন্ন বিষয়ে অবদানের জন্য সদর উপজেলার চম্পা বেগম, মমতাজ পারভীন, সাবিনা ইয়াসমিন ও জাহান আক্তারকে জয়িতা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
অনুভূতি প্রকাশ করেন জয়িতা পুরস্কার পাওয়া কেশবপুরের টুম্পা সাহা। তিনি বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর নিজের পড়াশুনা চালিয়ে নেয়া কঠিন ছিল। মা সব সময় পাশে থেকে সাহস, অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আমরা দুই বোন পড়াশুনা করেছি মায়ের অবদানের কারণে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনে পড়াশুনা করে এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছি। জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু মাকে সাথে নিয়ে কখনও পুরস্কার নেওয়ার সুযোগ হয়নি। এই প্রথম মাকে সাথে নিয়ে পুরস্কার নিচ্ছি। আমার কাছে বেগম রোকেয়া আমার মা।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. রফিকুল হাসান বলেন, আমাদের সমাজে নারীদের কিছুটা খাটো করে দেখার প্রবণতা আছে। এটা মূলত পরিবার থেকে শুরু হয়। একজন নারীকে নারী হিসেবে না দেখে মানুষ হিসেবে দেখে পুরুষের পাশাপাশি তাকে সমান অধিকার, মর্যাদা দিলে সমাজ আরও এগিয়ে যাবে। আমাদের সমাজে সিঙ্গেল মাদার নিয়েও অনেক নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়। এই নেতিবাচত মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে তার সংগ্রামের প্রশংসা করা উচিৎ। আমরা চাই পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান তালে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার ধারা অব্যাহত রাখবে। কোনো নারীকে পরিবারের বোঝা মনে করে বিয়ে দিতে হবে না। নারীরা নিজেদের পরিচয়ে যোগ্যতায় নিজের পছন্দমত, সুবিধাজনক সময়ে নিজেই বিয়ে করবে। নারীর অপমৃতে্যু আমরা চাই না।
Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version