♦ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রথমে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করতে হবে
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিস যশোরের আয়োজনে সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের অমিত্রাক্ষও সভাকক্ষে এ সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম শাহীন।
অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটি জ্ঞান ভিত্তিক অর্থনীতি এবং উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে পরিচিত করতে স্মার্ট বাংলাদেশ যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। যশোরকে স্মার্ট জেলা করতে হলে আগে স্মার্ট ভিলেজ গড়তে হবে। গ্রামের ঐতিহ্য যে ফসল বা পণ্য রয়েছে সেটা ব্যান্ডিং করতে উদ্যোগ নিতে হবে। যার মাধ্যমে পন্যটি সারাদেশের মানুষ অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করতে পারে। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ বা জেলা গড়তে হলে সবার আগে স্মার্ট ভিলেজ সৃষ্টি করতে হবে। একই সাথে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত। পড়াশোনা শেষ করে কাক্সিক্ষত কর্মসংস্থান না পেয়ে এমনটি সৃষ্টি হয়েছে। তবে যশোরবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়, এম এম কলেজসহ জেলার বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি করার উদ্যোগ নিতে হবে। স্মার্ট জেলা করতে হলে যশোরে স্বাস্থ্য সেবাকে আরোও উন্নত করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে বক্তরা বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে ভোগান্তি ও সময়ক্ষেপণ হয়। তাই অ্যাপস তৈরি করে চিকিৎসা সেবার সিরিয়াল দেয়া থেকে চিকিৎসা সেবার আধুনিকায়ন করতে হবে। আজকাল বিভিন্ন উন্নয়ন হয় তবেঅপরিকল্পিত। তাই প্রকল্পের একটি প্রকল্প মূল্যায়ন অ্যাপস তৈরি করতে হবে। যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণ তাদের উপকার ও ভোগান্তি সম্পর্কে জানাতে পারে। স্মার্ট জেলা গড়তে হলে তথ্যে প্রকাশ বাড়াতে হবে। যশোর জেলা প্রশাসনের বাতায়ন থাকলেও সেখানে তেমন একটা আপডেট থাকেনা বলেও সভায় অভিযোগ করা হয়। স্মার্ট ভিলেজের অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্নপন্য ব্যান্ডিং করার উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষকদের পণ্যের দাম সঠিক ও কৃষি সেবাবৃদ্ধি করতে কৃষকদের স্মার্ট আইডির আওতায় আনতে হবে। যশোরের সবজিসহ যে সবপন্য বেশি কওে উৎপাদন হয় ; সেই পণ্যকে ভোক্তাদের মাঝে পৌঁছে দিতে বা বাজারজাতকরণে‘ প্যাক হাউজ’ গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ প্রতিষ্ঠা ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট বাংলাদেশের রোডম্যাপ ৪টি পিলার স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গর্ভন্যান্স তৈরি হবে। এছাড়া স্মার্ট ও সবর্ত্র বিরাজমান সরকার গড়ে তুলতে জিডিটাল লিডারশিপ অ্যাকডেমি স্থাপন করা হবে। স্মার্ট সিটি, স্মার্ট ভিলেজ এরমাধ্যমে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিভিত্তিক, জ্ঞানভিত্তিক এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ। বক্তবে বক্তারা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সুধীজন স্ব-স্ব দপ্তর থেকে কি ধরনের কাজ করতে পারবেন এমন মতামত প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল পথ পরিক্রমায় আমাদের সামনে প্রযুক্তি নির্ভর, সাশ্রয়ী, টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক বুদ্ধিদীপ্ত, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশের হাতছানী রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আর্থিক খাতের কার্যক্রম স্মার্ট পদ্ধতিতে রূপান্তর হবে। ফলে আগামীদিনের ভবিষ্যৎ প্রজন্মেও সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এগিয়ে এসে কাজ করতে হবে। তবেই ২০৪১ সালেরমধ্যে প্রতিষ্ঠাপাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’
বক্তব্য প্রদান করেন যশোর জেলা আওয়ামী লীরে সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস যশোরের উপ-পরিচালক মধুসূদন সরকার, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক আরিফুল ইসলাম, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একরাম উদ দ্দৌলা, মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সহসভাপতি ওহাবুজ্জামান ঝন্টু, যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনোতোষ বসু, সাধারণ সম্পাদক এইচআর তুহিন, মনিরুল ইসলাম, ইন্দ্রজিৎ রায়, প্রণব দাস প্রমুখ। সূচনা বক্তব্য দেন জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম।