বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বগুড়ায় উদীচীর অনুষ্ঠানে হামলার প্রতিবাদে যশোরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও প্রতিবাদী গান পরিবেশন হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে শহরের ঈদগাহ মোড়ে উদীচী সংসদ যশোরের আয়োজনে প্রতিবাদী সমাবেশ হয়। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে প্রতিবাদী গান গেয়ে প্রতিবাদ জানান সাংস্কৃতিক কর্মীরা। ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের সমস্ত অর্জন ধূলিসাৎ করে নতুন কোনো ফ্যাসিস্ট অপশক্তি যেন জন্ম না নিতে পারে, এ আহ্বান জানান বক্তারা।
বক্তব্য রাখেন উদীচী যশোরের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা, খন্দকার আজিজুল হক, মুক্তিযোদ্ধা ইলাহদাদ খান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু, সুরধুনী সংগীত একাডেমি সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, চাঁদের হাট যশোরের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সুরবিতানের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব বিশ্বাস, বিবর্তন যশোরের সাধারণ সম্পাদক নওরোজ আলম খান চপল, কিংসুক সংগীত একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল কবির সোহেল, উদীচী গদখালীর সভাপতি আব্দুর রহিম, বাউল সংঘের সভাপতি বাউল পরিতোষ, গ্রাম থিয়েটারের সমন্বয়কারী হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী একের পর এক ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্পী, সংস্কৃতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। উদীচী স্বাধীনতার কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। উদীচী স্পষ্ট করে বলতে চায়-লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনার সঙ্গে যারাই বেইমানি করার চেষ্টা করবে, সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিরোধ করবে। এক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির বিদায় হয়েছে, নতুন করে যেন আর কোনো ফ্যাসিস্টের জন্ম না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টির রাখার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।
উদীচী যশোর সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির প্রতীক জাতীয় সংগীতের ওপর হামলা আসলে দেশের চেতনার ওপরই আঘাত। আমরা জাতীয় সংগীত গাইলে আমাদের গায়ের লোম কাঁটা দেয়; আর স্বাধীনতা বিরোধীদের গায়ে জ্বালা ধরে। জাতীয় পতাকা আজ খামছে ধরেছে শকুনেরা। তাই আজ তারা জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের কথা বলে। ৭১ এর পরাজিত শক্তিরা এ খেলার ধৃষ্টতা নতুন করে দেখাচ্ছে। দেশে বৈষম্য জন্য গণ-অভ্যুত্থানের হলেও এখনো মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে। একটি অপশক্তি নানাভাবে তারা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। তবে তাদের মনে রাখতে হবে, এ দেশের স্বাধীনতা বিশ্বাসী সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের রুখে দিবে। এ হামলার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।’