বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর যে পরিমান শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন শেষ করেন সেই পরিমান আসন নেই চাকরির বাজারে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুকছেন। এদিক থেকে নার্সিং-এ ক্যারিয়ার গড়া অনেকের এখন প্রথম পছন্দের। যদিও ভাল প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ এখানেও রয়েছে।
নার্সিং ক্যারিয়ারে আসা অস্বচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শিক্ষাব্যয় কমাতে শিক্ষাবৃত্তি চালু করলো যশোর আদ্-দ্বীন নার্সিং ইনস্টিটিউট।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রম শুরু করলেন আদ্-দ্বীন নার্সিং ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। প্রথম বছরে পাঁচ জন ছাত্রীকে এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এরা হলেন শামিমা শাম্মি মিতা, ফাতেমা বিবি রেশমা, সিগমা খাতুন, সানজিদা ইসলাম ও সুরাইয়া সুলতানা ঊষা।
এব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ড. ফিরোজা বেগম বলেন, এবছর থেকে পাঁচজন ছাত্রীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া পরিবারগুলোর চাপ কমবে। শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্তদের কারো বাবা চেনে নেই, কারো বাবা চা বিক্রেতা, ভ্যান চালক অথবা দিন মজুর। ভর্তির সময় যারা লোন করে অনেক কষ্টে অর্থ যোগাড় করে ভর্তি করিয়েছে, তাদের প্রিয় সন্তানকে নার্স বানাবে বলে। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দুইজন ছাত্রীকে অস্বচ্ছল ও মেধাবী কোটায় বিনা খরচে পড়ার সুযোগ দেয়ার কথা। কিন্তু আমরা সেখানে চারজনকে সেই সুযোগ প্রদান করছি। এবার এর সাথে আরও পাঁচজন শিক্ষাবৃত্তি সুবিধায় যুক্ত হল। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই উদ্যোগ অনন্য।
চার দশকের বেশি সময় ধরে আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন সমাজের অসহায় এবং সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই উদ্যোগ বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর নাজমুন নাহার। প্রতি বছর এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নার্স হবার স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃত্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন ছাত্রীকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা, তিন জনকে ৭০ (সত্তর) হাজার টাকা এবং একজনকে ৬৬ হাজার টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। এই অর্থ তাদের নিয়মিত বেতন এবং হোস্টেল ফি থেকে সমন্বয় করা হবে। বৃত্তিপ্রাপ্তদের চারজন ১ম বর্ষের এবং একজন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রয়েছেন। শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্তিতে খুশি ছাত্রীরা তাদের অনুভ‚তি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন- এই শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ দেয়ায় প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিন স্যারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। সেই সাথে অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর নাজমুন নাহার এবং অধ্যক্ষ ম্যাডামকেও ধন্যবাদ। এই সুবিধাতে আমাদের পরিবারের ওপর খরচের বাড়তি চাপ কমবে। আমরা সহজে নার্সিং পড়তে পারবো।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে ৭৬টি সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট ও কলেজ এবং ৩৩৪টি বেসরকারি নার্সিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version