বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে নাগরিকদের আন্দোলনের মুখে সাবমার্সিবল বিল আদায় থেকে পিছু হটলো যশোর পৌরসভা। গতকাল যশোর পৌরসভার সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে নির্ধারিত ৩শ’ টাকার বিল নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র। এছাড়া অন্যান্য দাবি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পানি কর, পানির বিলের সাথে নতুন করে সাবমার্সিবলের জন্য প্রতি মাসে ৩শ’ টাকার বিল ধার্য করে। যা পহেলা মার্চ থেকে আদায়ে নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি বিলের কপিও পৌঁছে দেয়া হয়। এ নিয়ে পৌরবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নাগরিকরা মতবিনিময় সভার মাধ্যমে সাবমার্সিবলের বিল বাতিলের পাশাপাশি অস্বাভাবিক হারে পৌর কর বৃদ্ধি বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে।
কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল পৌরসভায় অবস্থান ও স্মারকলিপি প্রদানের দিন ছিলো। সকাল ১১টা থেকে পৌর কমিটির উদ্যোগে কয়েকশ’ নাগরিকের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। বেলা ১২টার দিকে পৌরসভায় প্রবেশ করেন মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ। তিনি কার্যালয়ে প্রবেশের আগে বিক্ষোভকারী নাগরিকদের মাঝে হাজির হন। এ সময় পৌর নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে মেয়রের কাছে চার দফা দাবিসম্বলিত একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়। মেয়র এ সময় মাইক নিয়ে বক্তব্যকালে নতুন ধার্যকৃত সাবমার্সিবল বিল নেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন। নাগরিকরা এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এছাড়া অন্যান্য দাবি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র।
পৌর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ‘পৌর কর লাগামহীন ভাবে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। কর বাড়ানোর আগে পৌর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে অবজ্ঞা করছেন। সর্বশেষ যশোরে পৌরসভার সরবরাহ করা পানির পাশাপাশি বাসাবাড়িতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নলকূপ (সাবমার্সিবল পাম্প) বসিয়ে পানি তোলার কারণে ব্যক্তিগত পাম্পেও বিল আরোপ করে। এই বিল বাতিলের দাবিতে আমরা কর্মসূচি দিয়েছিলাম। আমাদের দাবি ছিলো, সাবমার্সিবল বিল বাতিল করা। সাপ্লাই পানি সরবাহর নিশ্চিত ও ব্যবহার নিশ্চিতযোগ্য করতে হবে। নয়তো পানির বিল বাতিল করতে হবে। ১০% পানি কর বাতিল করতে হবে। অস্বাভাবিক কর বৃদ্ধি ও পৌরসভার দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এই চারটি দাবির মধ্যে একটি দাবির সমাধান হয়েছে। অন্যান্য দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমরা আপাতত এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছি। তার মধ্যে বাকিগুলো সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবো।’ পৌর নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক শওকত আলী খানের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইকবাল কবির জাহিদ, তসলিম উর রহমান, শাহীন ইকবাল প্রমুখ।
এই বিষয়ে পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, ‘পৌরসভার পাইপলাইনে পানি সরবরাহে যে পরিমাণ খরচ, সেই পরিমাণ টাকা নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করা হয় না। ভর্তুকি দিয়ে পাম্প পরিচালনা করা হয়। মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে। পৌরসভার সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাবমার্সিবল বিল আদায় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। এখন নাগরিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সেটি নতুন ধার্যকৃত সাবমার্সিবল বিল নেয়া হবে না। আর নাগরিকদের অন্যান্য দাবিগুলো পৌর প্যানেলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’