রাজগঞ্জ (মণিরামপুর) প্রতিনিধি
মণিরামপুর উপজেলায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সেই সাথে বিভিন্ন জাতের সবজির চারা তৈরি, রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষকদের। ভোর থেকে শুরু হয় কৃষকেদের জমিতে চারা পরিচর্যা, আগাছা পরিস্কার ও পানি দেয়াসহ নানা কাজ। নিজেদের চাহিদার পাশাপাশি, বাণিজ্যিকভাবেও চাষ হচ্ছে সবজি। ভালো দাম পেতে আগাম শাক-সবজির চাষেও ঝঁকছেন তারা।
সরেজমিনে দেখো যায়, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাশের বিভিন্ন বাজরে সবজি পাঠাচ্ছেন কৃষকরা। পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির নারীরাও কৃষি কাজে অংশগ্রহণ করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এখনই পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন নানা শাক-সবজি ও চারা। জাতভেদে সবজি ও চারার দামও ভিন্ন।
উপজেলার সাহাপুর, হায়াতপুর, হরিশপুর, হাকিমপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা জানান, ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন নিয়ে বেরিয়ে পড়ি সবজি পরিচর্যায়। সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে কাজের চাপ। সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। আবার মূলধনও লাগে কম। এমনকি পরিশ্রমও বেশ কম। কম সময়েই সবজি বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। নিয়মিতই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায় সেই সাথে মেটে পরিবারের চাহিদাও। আর সবজির দামও ভালো পাওয়া যায় তাই সবজি চাষকেই আমরা লাভজনক মনে করছি।
চালুয়াহাটি ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল বলেন, এ এলাকায় শতাধিক নার্সারিতে রোগবালাইমুক্ত, উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি চারা তৈরি হচ্ছে। চারা তৈরির পর দেশের প্রায় অনেক জায়গায় তা সরবরাহ করা হয়।
নার্সারির মালিক বলেন, এলাকায় বেশ কিছু নার্সারি গড়ে উঠেছে। এর ফলে এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
স্থানীয় জিয়া বলেন, বছর জুড়েই সবজি চারা উৎপাদন করলেও সাধারণত প্রতিবছর জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সবজির চারা বেশি উৎপাদিত হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে চারা নিয়ে যান। ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁপে, বেগুন, টমেটো, বিজলি প্লাস, গ্রিন সুপার, গ্রিন মাস্টার, লুবাসহ নানা জাতের হাইব্রিড মরিচের চারা, পেঁয়াজ, রসুন, গাজর, পটল, শিম, বরবটি, পালং শাক, লাল শাক, সবুজ শাক, ঝিঙা, করোলাসহ বিভিন্ন জাতের সবজির চারার বাণিজ্যিক উৎপাদন হয় এ অঞ্চলে।
কৃষক নিরঞ্জন বলেন, বিজতলায় গরম পরিবেশ সৃষ্টি করতে পলিথিন দিয়ে ঘরের মতো তৈরি করা হয়। মাঝে মঝে ফাঁকা করে দেয়া হয় যেন বাইরের বাতাস বিজতলায় ঢুকতে করতে পারে। বিজ রোপণ থেকে শুরু করে প্রথম এক সপ্তাহের মতো এ কার্যক্রম চলে। বিজ গজিয়ে ওঠার পর চাষিরা পলিথিন সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর বিক্রির আগ পর্যন্ত চলে নিয়মিত পরিচর্যা।
চাষি রাকিবুল বলেন, বর্তমানে প্রতি এক হাজার পিস ফুলকপির চারা ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। বাঁধা কপির চারা হাজার থেকে ১২শ, মরিচের চারা ৮শ’ থেকে ১ হাজার, টমেটোর চারা ৭শ’ থেকে ১ হাজার। বেগুনের চারা ৮শ’ টাকায় বিক্রি করা হয়।
চালুয়াহাটি ইউনিয়নের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা ফারহানা ফেরদৌস বলেন, এ এলাকার চাষিরা নার্সারি আকারে নানা জাতের সবজি বিজতলা তৈরি করেছেন। প্রতিবছরের মতোই এবারও, এলাকায় ব্যাপক চারা উৎপাদন করা হয়েছে। স্বল্পমূল্যে গুণগত মানসম্পন্ন চারা পাওয়ায় প্রতি বছর এখানকার চারার চাহিদা বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ায় চারা উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য পলিথিনের ছাউনিতে নার্সারির বেডগুলো ঢেকে দেয়া হয়, চারা উৎপাদনে সম্পৃক্ত নার্সারি মালিকদের কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ। প্রদানের পাশাপাশি ওই এলাকায় নিয়মিত মাঠ দিবস পালন করা হয় বলেও জানান তিনি।
গতবছর রবি মৌসুমে উপজেলার নেংগুড়াহাট অঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার ৬’শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ বছর কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে মন্তব্য এ কৃষি কর্মকর্তার।
শিরোনাম:
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়
- ‘জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না’
- পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প কোচ সংকটে শিগগিরই চালু হচ্ছে না ট্রেন চলাচল
- শব্দ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী; যশোরে তিনদিনের নাট্য উৎসব হবে
- অভয়নগরে রবিউল হত্যা ওয়াহিদুলের রিমান্ড মঞ্জুর
- যশোর চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মিজান খান ও সম্পাদক সোহান নির্বাচিত
- কেশবপুরে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কুরআন ধরানো অনুষ্ঠান ও পরিচিত সভা