বেনাপোল সংবাদদাতা
যশোরের শার্শা উপজেলার ঠেঙামারী বিলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিলে কচুরিপানা ও জলাবদ্ধতার কারণে এ বছরও হাজার হাজার বিঘা জমি পতিত থাকার আশংকা রয়েছে। এ কারণে বোরো ধান রোপণ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

ঠেঙামারী বিলে এখন মাঠ ভর্তি কচুরিপানা। যা পরিস্কার করা দুরুহ। এ অবস্থায় ইরি বোরো মৌসুম আসন্ন হওয়ায় মাথায় হাত উঠেছে কৃষকদের। নভেম্বরের শেষে বিজতলা তৈরির সময়। এখনো বিল ভর্তি পানি। কবে পানি নামবে তা বলা যাচ্ছে না। সেই সাথে মাঠ জুড়ে কচুরিপানা। জমিতে পা ফেলার জায়গা নেই। শার্শা সীমান্তের ভারতের ইছামতি নদীর পানি এখনো প্রবেশ করছে বিলে।

এদিকে, শনিবার থেকে স্থানীয়ভাবে কচুরিপানা পরিস্কারের উদ্যোগ শুরু করেছেন। তারা বিল পরিস্কার করার অন্য উপজেলার থেকে কচুরিপানা কাটার মেশিন ভাড়া করে এনে জমি পরিস্কার করার চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, এ বছর বিলে এবং খালে যে পরিমান কচুরিপানা জমে রয়েছে তাতে বোরো ধান লাগানোর কোনো সম্ভাবনা তারা দেখছেন না। কচুরিপানা পরিস্কার করতে অনেক টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু এতো টাকা ব্যয় করেও যদি সময়মত বিলের পানি না নামে। তাহলে সমস্ত টাকাই পানিতে যাবে।

কৃষক নায়েব আলী জানিয়েছেন, মেশিনে এক বিঘা জমির কচুরিপানা পরিস্কার করতে সর্বনিম্ন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ পড়বে। আর এই কচুরিপানা রাখতে দুই কাঠা জমি ফেলে রাখতে হবে।

কৃষক আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, মাঠে কচুরিপানা পরিস্কার করা মেশিন আনা হয়েছে। যদি এতে খরচ কম হয় ও সহজে পঁচে নষ্ট হয় তা হলে তারা কচুরিপানা কাটা মেশিন দিয়ে জমি পরিস্কার করবেন। তিনি আরও বলেন, এত কিছুর পরেও ধান না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, আমরা ঠেঙামারী বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই স্থায়ী সমাধান চাই। শুনেছি সরকার খাল সংস্কার ও গেট নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছেন। যদি বাস্তবায়ন হয় তা হলে মাঠে ফসল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কায়বা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত এ সমস্যায় জর্জরিত। সমাধানে কেউ এগিয়ে আসেনি। ভারতীয় ইছামতি নদীর পানি এসে মাঠের পাশাপাশি বাড়িঘর প্লাবিত হয়ে যায়। খালের পানি বের করার কোন ব্যবস্থা নেই। শুনেছি সরকার খাল সংস্কার ও দাউদখালী খালমুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এলাকার সমস্যার সমাধান হবে কি না বলা যাচ্ছে না।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, দীর্ঘদিনের সমস্যা এটা। বছরের বেশির ভাগ সময় ভারতীয় পানিতে খালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কয়েকবার পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাল সংস্কার ও দাউদখালী খালমুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এলাকার সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে বলে তিনি জানান।

Share.
Leave A Reply

Home
News
Notification
Search
Exit mobile version