এস এম জালাল
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোও নড়েচড়ে বসেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই। তারা দলীয় হাইকমাণ্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি জনগণের আস্থা অর্জনে তৎপর রয়েছেন। তাদেরই একজন যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম। দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ায় জহুরুল ইসলামের তৎপরতাও বেড়েছে। সার্বক্ষণিক নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। অংশ নিচ্ছেন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও মানবিক নানা অনুষ্ঠানে। তৃণমূলের মানুষের কাছে নিজের ও দলের অবস্থান তুলে ধরছেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে নিবেদিত কর্মী হিসেবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখের সাথী হিসেবে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে চৌগাছার কোন নেতা সরকারি কিংবা বিরোধী দলের মনোনয়ন পাননি। এবার জহুরুল ইসলামকে ঘিরে আশায় বুক বেঁধেছেন তার অনুসারীরা। নেতাকর্মীরা মনে করছেন, ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে জহুরুল ইসলামকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে ধানের শীষ।
জানতে চাইলে চৌগাছা বিএনপির সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম বলেন, চৌগাছায় বিএনপি প্রতিষ্ঠা করতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। দলের প্রতিষ্ঠাকালীন উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। টানা ৩৮ বছর চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। দলের প্রতি আস্থা, ভালবাসা, বিশ্বাস ও আনুগত্যে কোন কমতি নেই। দলের প্রতিটি আদেশ, নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা একাধিকরার হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে। শারীরিকভাবে রক্তাক্ত জখম হয়েছি। একাধিকবার কারাবরণ করেছি। স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৬ সালে ডিটেনশনে আটক হই। শুধু রাজনৈতিক কারণে ১৭ বার জেলে গিয়েছি। তারপরেও দলের জন্য নিজেকে জনগণের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছি। ফ্যাসিবাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ভোটের অধিকার, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করেছি।
তিনি বলেন, তারুণ্যের অহংকার আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকবো।
জহুরুল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে লড়াই সংগ্রাম করেছি। দলের নির্দেশে সব সময় রাজপথে ছিলাম। তৃণমূলের নেতকর্মীদের সংগঠিত করেছি। তাদের মধ্যে মানুষের মাঝে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর এবার দলীয় মনোনয়ন চৌগাছা উপজেলাবাসী আশাবাদী ও উচ্ছ্বসিত। চৌগাছা উপজেলার সাধারণ ভোটারদের বিশ্বাস আগামী নির্বাচনে উপজেলার বাসিন্দা কেউ মনোনয়ন পেলে দলমত নির্বিশেষে সবাই তাকে ভোট দিবে। বিএনপির ৪৫ বছরের রাজনীতির ফল স্বরুপ দল আমাকে মনোনয়ন দিবে। ঝিকরগাছা ও চৌগাছার সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হব বলে আশাবাদী।’
জহুরুল ইসলাম ছাত্রদলের চৌগাছা থানা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। একটানা ২৬ বছর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এক যুগ ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি। পাঁচ বছর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ছিলেন। ১৯৮৩ সালে থেকে যশোর জেলা বিএনপি কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ছিলেন। এছাড়া পরপর দুইবার পাতিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। শারীরিকভাবে রক্তাক্ত জখম হন তিনি। শুধু রাজনৈতিক কারণে ১৭ বার জেলে যেতে হয়েছে তাকে। স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৬ সালে ডিটেনশনে আটক হয়েছিলেন। পাঁচ মাস কারাবাস করেছেন। ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় বিশেষ ক্ষমতা আইনে সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন।