বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী তার নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের জন্য সাক্ষাতের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ তার বাড়ির প্রধান ফটকে সাঁটিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপি এসএম ইয়াকুব আলীর সঙ্গে তার বাসভবনে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের সময়সূচি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের বাইরে কাউকে সাক্ষাতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
অনুরোধক্রমে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী তাপস মন্ডল ও প্রটোকল অফিসার শহিদুল ইসলামের নাম ও মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। এদিকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়সূচির নোটিশটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নেটিজেনদের অনেকে ফেসবুক পেজে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। অনেকে এটাকে চিকিৎসকের সাইনবোর্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
টিটোন বিশ্বাস নামে একজন নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘মাননীয় মহোদয় আপনার প্রথম সাক্ষাৎকার ফি কত এবং দ্বিতীয় সাক্ষাতে ফিফটি পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট আছে কি না? আর আপনার সাক্ষাতের রেট কত, যদি একটু অনুগ্রহ করে জানাতেন, তাহলে আমরা মনিরামপুরের জনগণ অনেক উপকৃত হতাম।’ বিএম হাফিজুর রহমান লিখেছেন, ‘নির্বাচনী এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়সূচি প্রকাশ করা রীতিমতো দুঃখজনক ঘটনা। আমরা আশাহত।’ মামুন আরিয়ুন লিখেছেন, ‘একজন জনপ্রতিনিধির সাক্ষাতের জন্য যদি সময় নির্ধারণ করে দেয়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।’
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু বলেন, ‘কখনো কোনো জনপ্রতিনিধি জনসাধারণের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় বেঁধে দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন, এমনটি দেখিনি। এটা ডাক্তার বা উকিলদের ক্ষেত্রে হতে পারে। কোনো অরাজনৈতিক লোক যখন জনপ্রতিনিধি হন, তখন জনগণ কাক্সিক্ষত সেবা পান না। সে ক্ষেত্রে জনগণকে এভাবে বঞ্চিত করা হয়।’
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য এসএম ইয়াকুব আলী বলেন, ‘অনেকে ভোরবেলায় আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। আমি যখন বেলা ১০টায় সাক্ষাৎ দিই, তখন তারা বলে ৪-৫ ঘণ্টা ধরে আপনার অপেক্ষায় আছি। আমি রাত ২টার সময় বাসায় ঢুকে ঠান্ডা খাবার খাই। এরপর আবার ভোর ৫টায় তো সাক্ষাৎ দেয়া সম্ভব হয় না।’
এমপি ইয়াকুব বলেন, ‘আমার তো জীবন। আমাকে তো পারতে হবে। আমি যদি মারা যাই তাহলে কেমনে হবে। আমার তো সরকারি কাজ আছে। পরিবার, ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। এরপরেও একজন এমপি জনসাধারণকে চার ঘণ্টা সময় দেয়া অনেক ব্যাপার। এখানে লেখা হয়েছে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তার মানে এই না যে দেখা করা যাবে না। আসলে ভালো কাজ করার সুযোগ নেই। সমালোচনার পরে ব্যানারটি নামিয়ে দিয়েছি।’