বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি দৈনিক সংগ্রামের যশোর প্রতিনিধি ও দৈনিক লোকসমাজের চীফ রিপোর্টার ছিলেন। তার মৃত্যুতে প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমানসহ ক্লাবের সদস্যবৃন্দ, দৈনিক লোকসমাজ ও দৈনিক বাংলার ভোর পরিবার গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার বেলা বারোটার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত থাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানান হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস মারা গেছেন। ডাক্তাররা বলেন সম্ভবত তার ডায়াবেটিস নীল হয়ে গিয়েছিল এ কারণে তিনি হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন এবং দ্রুত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
সহকর্মী সাংবাদিক রুহুল কুদ্দুসের মৃত্যুর সংবাদ শুনে সহকর্মী সাংবাদিকরা হাসপাতালে ছুটে যান। পরে তার মৃতদেহ নিয়ে শহরের বারান্দি পাড়ার বাড়িতে যান সাংবাদিকরা। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।
পরে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে সাংবাদিক মোস্তফা রুহুল কুদ্দুসের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার প্রিয় প্রতিষ্ঠান প্রেসক্লাব যশোর প্রাঙ্গনে। সেখানে প্রেস ক্লাব যশোর, যশোর সংবাদপত্র পরিষদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন মোস্তফা রুল কুদ্দুসের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। সাংবাদিক মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস প্রেসক্লাব যশোরের কোষাধ্যক্ষ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
পরে বাদ মাগরিব নামাজে জানাজা শেষে বারান্দি পাড়া কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস ১৯৬৩ সালে যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার গালদা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা। তার পিতার নাম শামসুর রহমান বিশ্বাস। মাতা খোদেজা খাতুন। ১৯৮৩ সালে শিক্ষার্থী অবস্থায় দৈনিক স্ফুলিঙ্গের ঝিকরগাছা সংবাদদাতা হিসেবে মোস্তফা রুহুল কুদ্দুসের সাংবাদিকতার হাতেখড়ি।
এরপর তিনি যশোরের দৈনিক ঠিকানা, দৈনিক কল্যাণ, দৈনিক রানার, খুলনার দৈনিক পূর্বাঞ্চল, ঢাকার ইউএনবিসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমে সাংবাদিকতা করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক সংগ্রামের যশোর জেলা প্রতিনিধি ও যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক লোকসমাজের চিফ রিপোর্টার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে ‘প্রথম আলো ট্রাস্ট’ আয়োজিত মাদক বিরোধী সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার লাভ করেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিয়মিত সাহিত্য চর্চা, নাটক লেখা ও নির্দেশনা দিয়েছেন।
এদিকে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের কার্যনির্বাহী সদস্য মোস্তফা রুহুল কুদ্দুসের মৃত্যুতে জেইউজে নেতৃবৃন্দের শোক প্রকাশ করেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের নেতৃবৃন্দ।
এক শোকবার্তায় সংগঠনের সভাপতি আকরামুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ বলেন, সাংবাদিক নেতা মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস’র জীবনাবসনের মধ্যদিয়ে যশোরের পেশাদার সাংবাদিকরা এক যোগ্য নেতৃত্ব হারালো। যা কোনদিন পূরণ হওয়ার মতো নয়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।