# মরদেহ নিয়ে রাতভর থানায়
# অবশেষে বোনের বাড়ি দাফন
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসান হত্যা মামলার আসামি আমিরুল ইসলামের লাশ দাফনে বাঁধা ও স্বজনদের পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আমিরুল ইসলাম (৫৬)। রাতে তার লাশ পৈত্রিক নিবাস মোবারকপুরে নেয়া হয়। এরপর আমিরুলের স্ত্রী আয়েশা বেগম, বড় মেয়ে রিনিকে বেদম মারপিট করে মরদেহসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় নিহত পিয়ালের স্বজনরা। রাতভর লাশ নিয়ে থানায় অবস্থান করে মৃতের স্বজনরা। বুধবার আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে বোনের শ্বশুরবাড়ির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানা যায়, ঝিকরগাছার যুবদল কর্মী পিয়াল হাসান হত্যা মামলার ১০ নম্বর আসামি আমিরুল ইসলাম (৫৬) খুলনা জেলখানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে। ২৭ জানুয়ারি জেলখানা থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামে আমিরুল ইসলামের মেয়ে রিনির বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে আমিরুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর কুইন্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
আমিরুল ইসলামের বোন পলি খাতুন জানান, আমিরুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে ঝিকরগাছা পৌর সদরের মোবারকপুর গ্রামে পৈত্রিক বাড়ি নেয় মৃতের মেয়ে ও স্ত্রী। আমিরুলের মরদেহ তার বাড়িতে নেয়ায় মেয়ে রিনি ও স্ত্রী আয়েশা বেগমকে মারপিট করে নিহত পিয়াল হাসানের পরিবারের লোকজন। এ সময় মরদেহসহ তাদেরকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে মরদেহ নিয়ে সারারাত ঝিকরগাছা থানায় অবস্থান করেন। বুধবার আমিরুলের মরদেহ ঝিকরগাছা পৌর সদরের কাটাখাল বেলে বটতলা গ্রামে বোন পলি খাতুনের বাড়িতে নেয়া হয়। বিকেলে তাকে উপজেলা শহরের কাটাখাল কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে পিয়াল হাসানের পিতা কিতাব আলী বলেন, আমাদের বাড়ির পরের বাড়িটি আমিরুল ইসলামের। আমার ছেলে খুনের পর তারা সবাই পলাতক ছিল। হঠাৎ আমিরুল মারা গেলে তার মরদেহ নিয়ে বাড়িতে আসে। এরপর আমার বাড়ির পাশে তাদের জমিতে দাফন করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় আমিরুলের স্বজনদের সঙ্গে আমার স্বজনদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তারা অন্য স্থানে দাফন করেছে বলে শুনেছি।
নাভারণ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আল নাহিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, আমিরুল ইসলামের মরদেহ নিয়ে থানায় আসে স্বজনরা। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকা হয় দাফনের ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু আমিরুলের স্বজনরা গ্রামে দাফন করতে রাজি হয়নি। পরে তারা পছন্দের করবস্থানে দাফন করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর যশোরের ঝিকরগাছায় যুবদল কর্মী পিয়াল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। তিনি মোবারকপুর বিশ্বাসপাড়ার কিতাব আলীর ছেলে। তার নামে বিস্ফোরক আইনসহ ১০টি মামলা ছিল।