বিশেষ প্রতিনিধি
এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থসম্পদ বেড়েছে তাদের স্ত্রী-সান্তানদেরও। কারো কারো স্ত্রী ত আবার অর্থ-বিত্ত ও আয়ে মন্ত্রী-এমপি স্বামীকে বহু পেছনে ফেলে দিয়েছেন। বেকার ও গৃহিণী থেকে ব্যবসায়ী বনেছেন কেউ কেউ। ব্যবসা আর রাজনৈতিক ক্ষমতার ‘আলাদিনের চেরাগ’ ঘষে একরম রাতারাতিই কোটিপতি বনে গেছেন তারা। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘পদ-পদবি জাদুর কাঠি। এসবের মাধ্যমে অর্থকড়ি অর্জনের পথ তৈরি হয়। এই পথে অনেকে নিজেরা যেমন সম্পদ আহরণ করেন, তেমনি স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনদেরও তার অর্থ-বিত্তের অংশীদার করে তোলেন। বৈধ পথে যদি তারা সম্পদ অর্জন করেন, তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা অবৈধ পথে এসব অর্থসম্পদ অর্জন করে থাকেন।’ সরকার নিজেও অনেক সময় পছন্দের লোকদের অন্যায় পথে সম্পদ উপার্জনের সুযোগ দিয়ে থাকে বলে মনে করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের চেয়েও বেশি সম্পদ রয়েছে তার স্ত্রী কাশমেরী কামালের। কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ, লালমাই) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এ প্রার্থীর হাতে নগদ আছে ২৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫০৯ টাকা। কিন্তু তার স্ত্রীর নগদ রয়েছে ১ কোটি ৭২ লাখ ৪৯ হাজার ১ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মুস্তফা কামালের নামে জমা আছে ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২৪ হাজার ৬৪৪ টাকা। আর স্ত্রীর নামে আছে ৬২ লাখ ৯৭ হাজার ৬২৭ টাকা। বন্ড, স্টক এক্সচেঞ্জে আছে ৫ কোটি ৪৪ লাখ ২ হাজার ১৫৩ টাকা। এক্ষেত্রে স্ত্রীর নামে রয়েছে ১১ কোটি ৪২ লাখ ১৩ টাকা। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইসিতে মুস্তফা কামালের দাখিল করা হলফনামা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তার হলফনামায় নিজের নামে পোস্টাল, সেভিংস, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ রয়েছে ৬ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৬০০ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৫ কোটি ৫১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৫ টাকা। অপরদিকে মন্ত্রীর নামে গাড়ি রয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার ৭১৮ টাকার। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকার গাড়ি। সব মিলিয়ে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে সম্মানী ভাতাসহ তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪১ কোটি ৯০ লাখ ৫৩ হাজার ৭১৪ টাকা। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬২ কোটি ২৭ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৮ টাকার সম্পদ।
হলফনামায় মন্ত্রীর বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫১৬ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে তিনি আয় দেখিয়েছেন ৫ লাখ ৭৬ হাজার। শেয়ার বাজার ও সঞ্চয়পত্র থেকে দেখিয়েছেন ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬৯ টাকা।
স্থাবর সম্পদেও মন্ত্রীর স্ত্রীর সম্পদ স্বামীর প্রায় দ্বিগুণ। মন্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৭৯ টাকার। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে একাধিক প্লট-বাড়িসহ ৫ কোটি ৪২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৮ টাকার সম্পদ। তবে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামার চেয়ে এবার মন্ত্রীর ২৪ কোটি ১৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩০ টাকার সম্পদ হ্রাস দেখানো হয়েছে। এ সম্পদ স্ত্রী কাশমেরী কামাল, দুই কন্যা কাশফি কামাল ও নাফিসা কামাল এবং ৫ নাতি-নাতনিকে দান করা হয়েছে। ২০১৮ সালের হলফনামায় মোট সম্পদমূল্য উল্লেখ করা হয়েছিল ৬২ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ১৫৩ টাকা। এর আগে ২০১৪ সালের হলফনামায় তার বার্ষিক আয় উল্লেখ করা হয়েছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৪ টাকা। সে হিসাবে মন্ত্রীর বার্ষিক আয় কয়েক গুণ বেড়েছে। তার নামে মানি লন্ডারিং, দুদক, আয়কর, অপারেশন ক্লিন হার্টসহ ফৌজদারি আইনে মোট ৮টি মামলার তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করার পাশাপাশি এসব মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।
জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের গত পাঁচ বছরে সম্পদ বেড়েছে ৩ গুণ। তার স্ত্রীর বেড়েছে দ্বিগুণ। পাঁচ বছর আগে ৪০ লাখ টাকার প্রাডো গাড়ির পরিবর্তে এখন তিনি ৮৪ লাখ টাকারও বেশি দামের বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করেন। তার স্ত্রী শেরীফা কাদের পাঁচ বছর আগে ১৫ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি ব্যবহার করলেও এখন ৫ গুণ বেশি মূল্যের ৮০ লাখ টাকার বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করেন। এ ছাড়া জি এম কাদের ও তার স্ত্রীর ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার পরিমাণও বেড়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা সম্পদবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। জাপা চেয়ারম্যান রংপুর-৩ ও ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট সদর আসনের প্রার্থী হিসেবে দাখিল করা হলফনামায় জি এম কাদের উল্লেখ করেছিলেন তার নগদ অর্থ রয়েছে ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৩ টাকা। গত পাঁচ বছরে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৩ টাকা। যা আগের তিন গুণেরও বেশি। পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রীর নগদ অর্থের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ২৭ লাখ ৬৪ হাজার ৭০১ টাকা। পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৩ টাকা। অর্থাৎ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এ ছাড়া জি এম কাদেরের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর আগে জমা ছিল ১৩ লাখ ২ হাজার ৪৩৫ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৩ টাকা। তার স্ত্রীর ছিল ৪ লাখ ৭ হাজার ২৫৮ টাকা। তা ৭ গুণ বেড়ে হয়েছে ২৭ লাখ ৯ হাজার ৩৫৯ টাকা।
প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে দশম সংসদ নির্বাচনে যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বপন ভট্টাচার্য। পরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান। গত পাঁচ বছরে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে পেয়ে স্বপনের বার্ষিক আয় তেমন না বাড়লেও বেড়েছে অস্থাবর সম্পত্তি। অবশ্য এ সময়ে স্ত্রী ও সন্তান হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের বার্ষিক আয় ছিল ৩২ লাখ ৯৭৮ টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮১ টাকায়। অথচ তার ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৪০৮ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৫২ হাজার ৫৩৪ টাকায়। গোপন করা হয়েছে রাজউকে থাকা প্লটের তথ্য।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, স্বপন ভট্টাচার্যের স্থাবর সম্পত্তি ছিল পৈতৃক সূত্রে পাওয়া চার বিঘা জমি, যার কোনো মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র লালদীঘির পাড় এলাকায় পৌনে ৯ শতক জমিসহ ৪তলা বাড়ি, যার মূল্য ৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা। মণিরামপুরে ৮০০ স্কয়ার ফুটের দ্বিতল বাড়ি, যার মূল্য ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া রাজউকে ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি প্লট।
এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ৩০০ টাকা, যা বর্তমান হলফনামায় দেখানো হয়েছে ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৬ টাকা। অস্থাবর সম্পদ ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯১৮ টাকা। ব্যবসা ও সঞ্চয়পত্রের সুদ থেকে এ আয় হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচনের দাখিল করা হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তি ছিল ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের ৬৩ শতক জমি ও ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকার ১৪০০ স্কয়ার ফুটের ফ্লাট। বর্তমান হলফনামায় ফ্লাটের তথ্য গোপন করা হয়েছে। এছাড়া তার হেফাজতে স্বর্ণালংকার দেখানো হয়েছে ১৭ ভরি, যার মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র ৮৫ হাজার টাকা। অথচ বর্তমানে এক ভরি স্বর্ণালংকারের বাজার মূল্য এক লাখ টাকার ওপরে। পূর্বের হলফনামায় ২৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকারের তথ্য দেওয়া হয়েছিল।
শুধু স্বপন ভট্টাচার্যের স্ত্রী নয়, একই সাথে বড়লোক হয়েছেন তার ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্যও। একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় ছেলের কোনো আয়, অস্থাবর, স্থাবর সম্পত্তি না থাকলেও দ্বাদশ নির্বাচনের হলফনামায় তাকে কোটিপতি হিসেবে দেখানো হয়েছে। ব্যবসা ও বাড়ি ভাড়া বাবদ তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৬৮ লাখ ৬১ হাজার ৫৬০ টাকা। নগদ, ব্যাংক জমা, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রি ও আসবাবপত্র মিলিয়ে অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে ৪৬ লাখ ৯ হাজার ১২৫ টাকা। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ২ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার ১৩৪ টাকার অকৃষি জমি, ৭৭ লাখ টাকার একটি ফ্লাটের তথ্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হেবাসূত্রে পাওয়া একটি ফ্লাটের তথ্য দেয়া হলেও তার মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।
রণজিত কুমার রায়
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনের বর্তমান সংসদ-সদস্য (এমপি) রণজিত কুমার রায়ের কাছে নগদ রয়েছে এক কোটি টাকা। সঙ্গে বেড়েছে তার স্ত্রী নিয়তি রানীরও। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা ২০০৮ ও ২০২৩ সালের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।
হলফনামায় দেখা যায়, এমপি রণজিতের বর্তমান বার্ষিক আয় ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৩ টাকা। যা ২০০৮ সালে ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর বর্তমানে কোনো আয় নেই। আগেও ছিল না। ২০০৮ সালের হলফনামায় উল্লেখ করা হয়, রণজিত কুমার রায়ের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছয় কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৮ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামায় তার স্ত্রীর নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ছিল ৮৫ হাজার টাকা। যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৭৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৯৮ টাকা।
২০০৮ সালে এমপি রণজিত কুমার রায়ের নামে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ ছিল। অস্থাবর সম্পদ বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৯৭ লাখ তিন হাজার ৮৬৮ টাকা। ২০০৮ সালে স্ত্রীর নামে ৮৫ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ ছিল। যা বর্তমানে এক কোটি ২২ লাখ তিন হাজার ২৯৮ টাকা। ২০০৮ সালে এমপি রণজিতের নামে দেড় লাখ মূল্যের স্থাবর সম্পত্তি ছিল। ১৫ বছরের ব্যবধানে তার স্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৫৭ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তার স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পত্তি না থাকলেও বর্তমানে এক কোটি ৫১ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ রয়েছে।
হলফনামা বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, তিনি ২০০৮ সালে ৪ বিঘা কৃষিজমি পৈতৃক সূত্রে পেলেও বর্তমানে ১২ বিঘা জমির মালিক। স্ত্রীর নামে ২০০৮ সালে কোনো জমি বা বাড়ি না থাকলেও বর্তমানে ৩টি বাড়ি রয়েছে। যার মূল্য হলফনামার তথ্য অনুযায়ী এক কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। একইসঙ্গে বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট হিসাবে ৫০ লাখ টাকার উল্লেখ করেছেন। ২০০৮ সালে তার কাছে এক লাখ টাকা নগদ থাকলেও বর্তমানে এক কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। ২০০৮ সালে এমপির স্ত্রীর কাছে ৭০ হাজার টাকা নগদ ছিল। বর্তমানে ৫১ লাখ ১৬ হাজার ৮৪০ টাকা রয়েছে। আগে ব্যাংকিং সঞ্চয় ডিপিএস হিসাবে কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে এমপি রণজিত রায় দম্পতির ২৭ লাখ ৩৮ হাজার ৪৯২ টাকা আছে। তার কোনো দায়দেনা নেই।
শাহীন চাকলাদার
যশোর-৬ কেশবপুর আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত তিন বছরে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপির। একইভাবে তার স্ত্রীও কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বেড়েছে স্বর্ণালংকারের পরিমাণও। এছাড়া শোধ করেছেন ৪ কোটি টাকার অধিক ঋণ। নির্বাচন কমিশনে তার দাখিলকৃত একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
২০২০ সালের ১৪ জুলাই উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। নির্বাচনের আগে তিনি যে হলফনামা দাখিল করেন তাতে তার বার্ষিক আয় দেখানো হয় ২ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে কোন তথ্য দেয়া হয়নি। আর স্থাবর সম্পত্তি ছিলো ৯৩৮.৩৫ শতক জমি, যার মূল্য ২ কোটি ৯৪ লাখ ৫ হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়া জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের মালিকানার শেয়ার ১৫ লাখ টাকা, ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ১৮.৩৫ শতক জমির উপর দুটি বাড়ি, ঢাকার মহাখালী ও কলাবাগান এলাকায় মোট ১৯শ’ বর্গফুটের দুটি ফ্লাট, যার মূল্য ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৫ টাকা। এছাড়া তিনি ব্যাংকে ১৪ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯৫ টাকার ঋণ ছিলেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার বার্ষিক আয় কমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৮৭৮ টাকায়। অথচ বেড়েছে তার অস্থাবর সম্পত্তি। গত তিন বছরে তিনি বন্ড, বাস-ট্রাক, ইলেক্ট্রনিক মালামাল, আসবাব, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার অর্জনের মধ্য দিয়ে ৪ কোটি ৬ লাখ ১১ হাজার ৫২২ টাকার মালিক হয়েছেন। একইসাথে তার স্ত্রী একইভাবে ১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার মালিক হয়েছেন। হিসেবে দেখানো হয়েছে গত তিন বছরে শাহীন চাকলাদার ও তার স্ত্রী ৭৫ ভরি (২০+৫৫) স্বর্ণালংকারের মালিক হয়েছেন। যার বাজার মূল্য দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
এছাড়া স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে তার। ২০২০ সালে এমপিও হওয়ার আগে জমি ছিলো ৯৩৮ দশমিক ৩৫ শতক। সেটা বর্তমানে ৩৩১ শতক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৯ শতকে। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ৬শ’ টাকা। পাশাপাশি বাড়ির জমি ১৮.৩৫ শতক থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮.৬১ শতকে। জমির দাম ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ১০ শতক জমি ক্রয় করতে ৪০ লাখ টাকা বায়না দিয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
হাসানুল হক ইনু
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কাছে নগদ টাকা ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার। এখন তার কাছে নগদ টাকা আছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ ১৫৫ টাকা। অর্থাৎ ১০ বছরের ব্যবধানে তাঁর নগদ টাকা বেড়েছে প্রায় ৫২ গুণ। এ ছাড়া তার স্ত্রী আফরোজা হকেরও নগদ টাকা বেড়েছে।
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনুর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় দেয়া তথ্যমতে, ইনুর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে গাড়ি বিক্রির ১ কোটি ৫৮ লাখ ১৫৫ টাকা ও ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। গত নির্বাচনের সময় নগদ ছিল ৫০ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৬ টাকা। আর ১০ বছর আগে নির্বাচনের সময় ছিল মাত্র ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এবার তার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯২৪ টাকা, ৫ বছর আগে ছিল ৪৪ লাখ ৫১ হাজার ৪৮০ টাকা। ১০ বছর আগে ছিল ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ১৫৬ টাকা।
ইনুর স্ত্রী আফরোজা হকের নগদ টাকা আছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৩ টাকা। ৫ বছর আগে ছিল ৬০ লাখ ৩ হাজার ২৫৮ টাকা। আর ১০ বছর আগে ছিল মাত্র ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৯০ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ২৭০ টাকা। ৫ বছর আগে ছিল ১৪ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭ টাকা। আর ১০ বছর আগে ছিল মাত্র ৮০ হাজার ৪৯৩ টাকা।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী
২০০৮ সালের পর থেকে সিলেট-৪ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও তার স্ত্রীর সম্পত্তি বেড়েই চলেছে। ২০২৩ সালের মধ্যে এই মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ২২ গুণ। অর্থাৎ ২০০৮ সালে মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩৪ লাখ ৭ হাজার টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৫ হাজার ২৮ টাকায়। আগের তিনটি ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা যায়।
২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় পেশায় চা ব্যবসায়ী ও পরামর্শক ইমরান আহমদের বার্ষিক আয় ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যা মূলত পেশাগত খাত থেকে আয়। এ সময় তার ওপর নির্ভরশীলদের (পরিবারের অন্য সদস্য) বার্ষিক মোট আয় ছিল ১১ লাখ ১১ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মন্ত্রীর বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৮২ হাজার টাকায় এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদের সময় হয় ২৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকায়। তবে ২০১৮ সালে তিনি নির্ভরশীলদের আয় প্রদর্শন করেননি।
আসন্ন নির্বাচনের হলফনামায় তিনি তার বার্ষিক আয় উল্লেখ করেছেন ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ২৫১ টাকা। যার মধ্যে চাকরি (মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে) থেকে আয় ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ১৯৬ টাকা। বাকি টাকা ব্যবসা, শেয়ার ও ব্যাংকের সুদ থেকে। এ হলফনামায়ও তিনি তার ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয় প্রদর্শন করেননি।
২০০৮ সালে ইমরান আহমদের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ নগদ টাকা, শেয়ার ও অন্যান্য মিলে ছিল ৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা ও তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ২৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকাÑ যার মধ্যে রয়েছে ১টি গাড়ি ও নগদ টাকা।
২০১৪ সালে তার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ লাখ ৯২ হাজার টাকা, যার মধ্যে ২২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা নগদ ও বাদবাকি শেয়ার, গাড়ি ও অন্যান্য। এ সময় তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ লাখ টাকা, যার মধ্যে ৫৫ লাখ টাকা নগদ।
২০১৮ সালে মন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ কোটি ৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে নগদ ৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে আমানত ১ কোটি টাকা এবং শেয়ার, গাড়ি ও অন্যান্য রয়েছে। এ সময় তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ হয় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। যার সিংহভাগই ব্যাংকে আমানত। নতুন হলফনামায় তার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭১৯ টাকা। যার মধ্যে ৩১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা নগদ, ১ কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৭ টাকা ব্যাংকে জমা, ৯ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার, ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ৫৩৫ টাকার গাড়ি, ১ কোটি ২৯ লাখ ২৫৮ টাকা অন্যান্য ব্যবসায় পুঁজি ও ৯০ হাজার টাকা অন্যান্য খাতে। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তিও এ সময় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭০ হাজার ৯ টাকায়। যার মধ্যে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৯ টাকা ব্যাংকে, ৪২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার দুটি গাড়ি ও ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার রয়েছে।
স্থাবর সম্পত্তির হিসেবে ২০০৮ সালে ইমরান আহমদের ছিল ৫৫ হাজার টাকার কৃষিজমি। তার স্ত্রীর নামে ছিল ১ কোটি ৩ লাখ টাকার একটি দালান ও অকৃষি জমি।
২০১৪ সালে মন্ত্রী ইমরান আহমদের স্থাবর সম্পত্তির অপরিবর্তিত থাকে। তবে এবার শ্রীপুর চা-বাগানের ব্যক্তিগত মালিকানা ও ২০১২ সালে সম্পাদিত সরকারি ইজারার তথ্য প্রদর্শন করেন। এ সময় তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি অপরিবর্তিত থাকে।
পানিসম্পদ মন্ত্রী
গত পাঁচ বছরে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের আয় বেড়েছে ৩৭ গুণ। একই সময়ে তার স্ত্রী মালিক হয়েছেন ২ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৫ টাকার। একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে হলফনামায় দেওয়া তথ্য থেকে এ হিসাব পাওয়া গেছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় জাহিদ ফারুক তার স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদ উল্লেখ করেননি। কিন্তু এবারের হলফনামায় স্ত্রীর নামে ২ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৫ টাকা থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে নগদ আছে ৯২ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৫৬ লাখ টাকা, স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৭০ লাখ টাকা ও ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আরও রয়েছে ৫০ হাজার টাকার সোনার গয়না। ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় স্ত্রীর নামে ৩০ ভরি সোনার গয়নার কথা উল্লেখ করলেও এবার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন মাত্র ১০ তোলা সোনার গয়না।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাহিদ ফারুক বছরে আয় দেখিয়েছিলেন ৪ লাখ ৫১ হাজার ৮০২ টাকা। এবার হলফনামায় বছরে আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৫৮ টাকা।
জাপা মহাসচিব
কিশোরগঞ্জ-৩ আসন (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর ১০ বছরে সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ গুণ। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তার মোট সম্পদ ছিল ২ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪৮ টাকা। ২০১৮ সালে মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৮ হাজার ৯১৭ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুন্নুর মোট সম্পদের পরিমাণ হয়েছে ৬ কোটি ৫৫ লাখ ৩৯ হাজার ৮২৭ টাকা। তার স্ত্রী রোকসানা কাদের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। ২০১৮ সালের হলফনামায় তার সম্পদ ছিল ১ কোটি ৩২ লাখ ৪ হাজার ৭৭৩ টাকা। ২০২৩ সালে সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৬০ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৩ টাকা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘স্ত্রী বা সন্তান যে কারও স্বামী বা পিতা-মাতার সম্পদের অংশীদার হওয়ার বৈধতা রয়েছে। তবে এখানে দেখার বিষয় হচ্ছে তা বৈধ না অবৈধ প্রক্রিয়ায় অর্জিত হয়েছে। যদি এমপি, মন্ত্রী বা অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পদ অবৈধ পথে অর্জিত হয়, সেখানে যিনি অর্জন করলেন তার যেমন দায় রয়েছে, ঠিক যাদের এসব সম্পদের অংশীজন করা হয়েছে, তাদেরও দায় আছে। এখানে তিনটি বিষয় কাজ করে। প্রথমত, স্বামী বা পিতা-মাতার চাপের কারণে সে অনিচ্ছা থাকার পরও সেই সম্পদের অংশীজন হয়। দ্বিতীয়ত, তাকে চাপ দিয়ে অংশীদার করা হয়। তৃতীয়ত, পারিবারিক কারণে তারা এর বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে না । তারা যদি বৈধ সম্পদের অধিকারী হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সম্পদ যদি অবৈধ হয়, তাহলে সেসব ব্যক্তিরাও সমানভাবে অপরাধী।