বাংলার ভোর প্রতিবেদক
সাংবাদিক অশোক সেন ছিলেন প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার ধারক বাহক। অশোক সেনেরা সমাজে যতটা প্রতিষ্ঠা পাবে। সমাজ প্রতিক্রীয়াশীল মৌলবাদী গোষ্ঠী থেকে ততটা মুক্ত হবে। অসাম্প্রদায়িক ও পরিশীলিত সমাজ বিনির্মাণে অশোক সেনের আদর্শ ও চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
শুক্রবার সকালে প্রথম আলো যশোর অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক অশোক সেনের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রথম আলো যশোর বন্ধুসভা ও অশোক সেন স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে এই স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে অশোক সেনের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় বন্ধুসভার বন্ধুরা সমবেত কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ গান পরিবেশন করেন। ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি অশোক সেন দূরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্ধুসভার সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। বক্তব্য রাখেন জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ যশোরের সভাপতি শ্রাবণী সুর, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী যশোর জেলা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৌমেশ মুখার্জী, প্রথম আলোর যশোর প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন সাইদুর প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন আবৃত্তি ও অভিনয় শিল্পী জাহিদুল জাদু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার সভাপতি মুরাদ হোসেন।  অনুষ্ঠানে আবৃত্তি শিল্পী ও শিক্ষক শ্রাবণী সুর বলেন,  ‘দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে অশোক সেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গে স্মরণার্থীদের তালিকা তৈরিতে সহযোগিতা করতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হয়েও সনদপত্র নিয়ে গেজেটে নাম লেখাতে কখনো আগ্রহী ছিলেন না। তার দেশপ্রেমের আদর্শ অনুসরণ করলে তার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হবে।’ সংস্কৃতিজন সৌমেশ মুখার্জী বলেন, ‘অশোক সেন ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। আদর্শ সংগঠন ছিলেন। প্রথম আলো বন্ধুসভা বা উদীচীর কোনো অনুষ্ঠানে তিনি কখনো সামনের সারির চেয়ারে বসতেন না। সবার পিছনে বসে অনুষ্ঠানের খুটিনাটি পর্যবেক্ষণ করতেন। অসামঞ্জস্য কিছু দেখলে ব্যবস্থা নিতে বলতেন’।
বক্তারা বলেন, ‘অশোক সেন ছিলেন সুসাংবাদিকতার পথিকৃৎ। আজীবন নির্মোহ থেকে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করে গেছেন তিনি। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন তিনি। তার সততা ও নিষ্ঠার জন্যে তিনি শত বছর বেঁচে থাকবেন। নতুন প্রজন্মের মধ্যে তার আদর্শ ও চেতনা ছড়িয়ে দিতে পারলে অশোক সেনের আত্মা শান্তি পাবে।’

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version