বাংলার ভোর ডেস্ক
ভারতের দিভানি লিন্ডার পেনাল্টি শট ঠেকিয়েই মাঠে শুয়ে পড়লেন ইয়ারজান বেগম। ততক্ষণে সুরভী আকন্দ প্রীতিরা দৌঁড়ে এসে জড়িয়ে ধরেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষককে। নাটকীয়তায় ভরা এক ফাইনাল শেষে জয়ের নায়ক যে ইয়ারজান।
অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। রবিবার নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে টাইব্রেকারে বাংলাদেশ ৩-২ গোলে হারিয়েছে ভারতকে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ছিল ১-১ গোলে সমতা।
এদিন যেন কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ফিরে এলো নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে। ৮ ফেব্রুয়ারি অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও এভাবেই ১-১ এ সমতা ছিল নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ। সেদিন অবশ্য অনেক নাটকীয়তা ফাইনালে টাইব্রেকারে কেউই জেতেনি। ২২ গোলের সাডেন ডেথের ফাইনালে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারত। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৬ দলের মেয়েরা ট্রফিটা নিয়ে আসছে বাংলাদেশেই।
টাইব্রেকারের প্রথম শটেই সুরভী আকন্দের শট ঠেকিয়ে দেন ভারতের বদলি গোলরক্ষক সুরাজমুনি কুমারী। ম্যাচের শেষ মিনিটের আগে প্রথম গোলরক্ষক মুন্নিকে বদলে তাকে নামায় ভারত। কিন্তু এরপরই শুরু হয় আসল নাটক। একে একে ভারতের ৩টি শট ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক ইয়ারজান।
শুধু বাংলাদেশের আলপি আক্তারের শট পোস্টে লেগে ফিরে। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোল খেয়ে বসে বাংলাদেশ। আনুশকা কুমারীর নিখুঁত ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় ভারত। নিজেদের অর্ধ থেকে বনিফিলিয়া সুল্লাহ লম্বা বল ফেলেন বাংলাদেশ রক্ষণে। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকেই বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান আনুশকা। বলের দিকে ঝাঁপিয়েও তার নাগাল পাননি বাংলাদেশ গোলরক্ষক ইয়ারজান।
গোল খেয়েও প্রথমার্ধে অবশ্য খুব বেশি আক্রমণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪৩ মিনিটে ফাতেমার কর্নার ভারতের গোলকিপার মুন্নি ফিস্ট করে ক্লিয়ার করেন।
গোল শোধে মরিয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে। ম্যাচে ক্রানুচিং মারমার বদলি নামেন অনন্যা মুর্মু বিথি। আর মোমিতা নামল ফাতেমার বদলে। এই দুটি বদলে খেলার গতি বেড়েছে। বাড়ে আক্রমণও।
সেই আক্রমণের ফলই বাংলাদেশের গোল। ৭০ মিনিটে অন্যনার কর্নার থেকে মরিয়ম গোল করে সমতায় ফেরায় বাংলাদেশকে। ভারতীয় গোলরক্ষক মুন্নি প্রথমে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন। ফিরতি বল থেকে মরিয়মের চিপ গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে ঢুকল জালে।
টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছেন ইয়ারজান বেগম। ৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন যুগ্মভাবে ভারতের আনুশকা। আর ৫ গোল করে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সুরভী। ফেয়ার প্লে ট্রফি পেয়েছে ভুটান।