রাজগঞ্জ প্রতিনিধি: রাজগঞ্জ, নেংগুড়াহাট গ্রামাঞ্চলের গাছগুলো এখন সজনে ডাটায় ভরা। গাছের ডালগুলোতে থোকায় থোকায় ঝুলছে সজনে ডাটা। চলতি মৌসুমে মণিরামপুর উপজেলার নেংগুড়াহাট অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামের বাড়ির পাশে পতিত জমি, রাস্তার পাশে, আনচে-কানাচে যত্নে-অযত্নে বেড়ে ওঠা প্রতিটি সজনে গাছের শাখা-প্রশাখা নুয়ে পড়ছে ডাটার ভারে।
বহুগুণে গুণান্বিত জাদুকরি সবজি, এই সজনে ডাটা নেংগুড়াহাটে এখনও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু না হলেও বাজার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা সজিনা গাছগুলির প্রতি যত্নশীল হয়েছে গাছের মালিকরা। মৌসুমের প্রথমেই সজনে ডাটা বিক্রি হয় ৪০০-৮০০ টাকা কেজি। যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। তবে ডাটা যখন পরিপুর্ন রুপ নিয়ে বাজারে আসে তখন দাম কমে। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রতিটি গাছে গাছে ফলন এসছে প্রচুর। সজিনা উৎপাদনের উপর চাষীদের কোন খরচ হয়না। ফলে গাছ থেকে যতটুকু সজিনা ডাটা উৎপাদন হয় তার সবটুকুই চাষিদের লাভ। নেংগুড়াহাটের অঞ্চলের কত জমিতে সজিনার গাছ আছে তার সঠিক হিসেব নেই। তবে গত ৬ বছর আগে কৃষি উদ্যোগে উন্নয়ন প্রকল্পে উপজেলার কয়েকটি গ্রামকে সজিনা গ্রাম নামে পরিচিত দেয়া হয়। সে গ্রামগুলিতে এখন সজিনা গাছে ভরে গেছে। সজিনা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি কর্মকর্তারা চাষীরা তাদের নিজের উদ্যোগে সজিনা গাছ লাগিয়েছে। সেই হিসেবে কৃষি কর্মকর্তাদের ধারনা, প্রায় জমিতে সজিনা গাছ আছে। গড়ে প্রতিটি গাছে ২০ কেজি করে সজিনা ফলন পেয়েছেন। মনিরামপুর উপজেলা আটঘরা গ্রামের সজনে চাষি সাবেক মেম্বার ছবেদ আলী মহলদার বলেন, বাণিজ্যিকভাবে মাঠে কোন জমিতে সজনে চাষ করি না। নিজ বাড়ির চারপাশে ১০টি সজনে গাছ লাগিয়েছেন,এই গাছগুলি লাগাতে কোন খরচ হয়নি তার। তিনি প্রতি মৌসুমে ৬-৭ হাজার টাকার ডাঁটা বিক্রি করে থাকেন। এবার গাছে যে পরিমাণ ডাটা ধরেছে তাতে তিনি আশাবাদি ১০ হাজার টাকার ডাটা বিক্রি করবেন। একই গ্রামের আর এক চাষী আব্দুল মাবুদ বলেন, এখন সজিনা গাছে থোকায় থোকায় ডাটা ধরেছে। কোনো কোনো গাছে পাতা না থাকলেও গাছ ডাটায় পরিপূর্ণ। তিনি মূলত নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণেই বাড়ির পাশে কয়েকটি গাছ লাগিয়েছেন। তবে সজিনা গাছগুলোতে যে পরিমাণ ডাঁটা পাওয়া যায় তা পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বিক্রিও করেন তিনি। এর প্রধান শত্রু হচ্ছে ঝড়,তবে ঝড়ে যদি ডাল ভেঙ্গে যায় তাতে সমস্যা নাই,যদি গাছটা ঝড়ে উপড়াতে না পারে।
মনিরামপুর উপজেলা চালুুয়াহাটি ইউনিয়ন কৃষি উপ-সহকারী মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন,এই বছরের আবহাওয়া অনুকূলে ভাল থাকায় বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর সজিনার সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে। সজিনা পুষ্টিকর সবজি হিসেবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে সজিনা ক্ষেত গড়ে তোলার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে।