সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাওয়ায় উপজেলার ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুভাষ দাসকে নির্যাতন ও নির্যাতনকারির চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েকে দিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বিকেলে ওই শিক্ষককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলার নুরুল্লাহপুর গ্রামের সুভাষ চন্দ্র দাসের বড় মেয়ে রমা রাণী দাস জানান, ১৫ লাখ টাকায় বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেবেন এমন শর্তে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রীকে টাকা দেয়া হয়। কিন্তু কথা মোতাবেক এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরি না হওয়ায় টাকা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করায় ইস্টম ও তার স্ত্রী অঞ্জলী দাসের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের চিড় ধরে। একপর্যায়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে তাকে ৫০ হাজার টাকা ফিরিরে দেন ইস্টম দাস। তবে স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করেন অঞ্জলী দাস নিজের রূপ লাবণ্য ব্যবহার করে চাকরি দেয়ার নাম করে বিভিন্ন লোকের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন। ওই সব ব্যক্তিরা টাকা ফেরত চাইলে নানাভাবে হয়রানিও করেন তিনি। ঠিক তেমনিভাবে টাকা ফেরৎ চাওয়ায় সুভাষ দাসকে শায়েস্তা করতে ইস্টম পরিবারের কাছের মানুষ আকাশকে দিয়ে নির্যাতনের পর পরিকল্পিতভাবে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করা হয়।
নুরুল্লাহপুর গ্রামের ছায়া রানী দাস জানান, ঘটনার দিন স্কুলে আসার পর শিক্ষক সুভাষ দাসকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সাগরেদ আকাশ মারপিট করেন। যে ঘটনা শিক্ষক সুভাষ তার ক্লাস্টার (এটিও) সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অসীম সরকার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সূর্যপদ পালকে অবহিতে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরদিন ১১ মার্চ সুভাষ থানায় ৪২৯ নং সাধারণ ডায়েরী করেন। ১২ মার্চ তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিনই যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরবর্তীতে যথাযথ তদন্ত না করে গত ১৫ মার্চ শুক্রবার রাত ১২টার পরে পুলিশ বাড়ি থেকে ডেকে থানায় নিয়ে পরদিন আকাশ দাসের শিশু কন্যাকে শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠিয়েছে।
ইসলামকাটি ১০৫ নং আদর্শ সরকাারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানান, ৯ মার্চের পিকনিক উপলক্ষে আয়োজিত নাটকে অভিনয়ের জন্য ৭ মার্চ গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে রিহার্সেলে অংশ নেন।
রিহার্সালের বেলা ১১টা ৪৮ মিনিট, ১১ টা ৫৬ ও ১১ টা ৫৮ মিনিটের ভিডিও ও স্থির চিত্র ধারণ করে তা নিজের ফেইসবুকে পোস্ট করেন ইসলামকাটি আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সঞ্জয় ঘোষ।
তালা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অসীম কুমার সরকার জানান, হাজিরা খাতার স্বাক্ষর ও নাটকের রিহার্সালের চবি দেখে শ্লীলতাহানির অভিযোগটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দু’ বছরের বেশি ধরে মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য ছিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তালা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তালা থানার উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামান জানান, ১৬ মার্চ আকাশ দাসের দায়ের করা মামলার আসামি সুভাষ দাসকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ভিকটিম ওই শিশু ১৬ মার্চ বিচারিক হাকিম নয়ন বিশ্বাসের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তবে রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তিনি জবানবন্দির কপি পাননি।
তালা থানার পুলিশ পরিদর্শক মোল্লা মো. সেলিম জানান, স্পর্শকাতর মামলা এটি। যথাযথ তদন্ত করে পরবর্তীতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
শিরোনাম:
- চৌগাছায় পুকুর দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার ৩
- যশোরে গির্জায় গির্জায় প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ‘শুভ বড়দিন’ উদযাপিত
- আমরা কি পিণ্ডির হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম, দিল্লির হাতে বন্দি হওয়ার জন্য
- ভয়াবহ দূষণ সংকটে চার নদী
- কেশবপুর মডার্ণ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু
- ‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!
- ‘অজ্ঞাত আসামি’র মামলায় গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধের দাবি
- প্রথমবারের মত ঈদগাহ ময়দানে বক্তব্য রাখবেন জামায়াত প্রধান