অভয়নগর সংবাদদাতা:
যশোরের অভয়নগরে ভুল অপারেশনে ইতি বেগম (২২) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাতে উপজেলার নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ইতি বেগম উপজেলার ধোপাদী গ্রামের আরশাব শেখের মেয়ে ও দর্শনা উপজেলার রাজ হোসেনের স্ত্রী। তার একটি ৭ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। ওই নারীর মৃত্যুতে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। পরে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, শনিবার (২৯ জুন) অন্তঃসত্ত্বা ইতি বেগমকে ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ ওই নারীকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পরে প্রসূতির রাত ৩টার পর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার অবস্থা খারাপ দেখে রোববার খুলনায় রেফার করেন ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ। স্বজনরা খুলনা নেয়ার পথে ওই নারীর মৃত্যু হয়। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ওই হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিলে উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ বন্ধ করে।
জানা গেছে, নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালে এর আগেও ভুল সিজারিয়ান অপারেশনে অনেক রোগীর মৃত্যু হলেও অজানা কোন কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোন আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে দিন দিন ওই হাসপাতালে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। এ হাসপাতালের সকল অনিয়ম বন্ধ করতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন সচেতন মহল।
নিহত নারীর স্বজন রফিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এই হাসপাতালে অনিয়মের কোন শেষ নেই। প্রায়ই এখানে চিকিৎসাজনিত কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আমরা এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছিনা। আমরা চাই ভুল চিকিৎসার অবসান হোক ও এই নারীর মৃত্যুর সঠিক বিচার হোক।
ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম জানান, ডাক্তার সময় মতো সঠিক চিকিৎসা করার পরেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আমরা খুলনা পাঠিয়েছি। ওই রোগীর আইসিইউ খুব দরকার ছিলো। আমাদের চিকিৎসায় কোন ভুল নেই।
এ বিষয়ে চিকিৎসক মঞ্জুরুল মোরশেদ মুঠোফোনে জানান, ভুল কোন চিকিৎসা নয়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে দ্রুত খুলনায় পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এভাবে ওই নারীর মৃত্যু হবে ভাবতেও পারছিনা। এই বলে তিনি লাইন কেটে দেন।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, নওয়াপাড়ার ফাতেমা হাসপাতালে উত্তেজিত জনতা ঘেরাও করে রাখে। খবরটি শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।