বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানকারী যশোরের আলোচিত সন্ত্রাসী আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙে লিটনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে যশোরের আদালত। আজ বুধবার দুপুরে গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিনের আদালতে অস্ত্র মামলায় আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফিঙে লিটন যশোর শহরের মোল্লাপাড়ার বদর উদ্দিনের ছেলে।
আদালত পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকসানা খাতুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘১৯৯৯ সালে অস্ত্র আইনের একটি মামলায় লিটনের ১০ বছর সাজা হয়। এরপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। ওই মামলায় আজ তিনি আত্মসমার্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন’।’
যশোরের সব শ্রেণিপেশার মানুষ, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবার কাছে আলোচিত নাম ‘ফিঙে লিটন’। অস্ত্র, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ২০/২২টি মামলা মাথায় নিয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি দেশান্তরী। এসময়কালে ভারত, নেপাল, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও কাতার অবস্থান করেছেন। জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হলেও গ্রহণ করেছেন নেপালি পাসপোর্ট। দেশান্তরী থেকেও যশোর শহরের সর্বেসর্বা ছিলেন ফিঙে লিটন। যশোরে দুই দশকের অঘোষিত এই সম্রাটের সব অপকীর্তি ওপেন সিক্রেট হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। বিদেশে থাকলেও দেশে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি স্ত্রী ফাতেমা আনোয়ারকে রাজনীতিতে সক্রিয় করেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দিতা করে সাড়া ফেলেন।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে ফেরেন ফিঙে লিটন। আজ বুধবার চরম গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে ১৯৯৯ সালের ১৩ জুন দায়ের করা অস্ত্র মামলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফারজানা ইয়াসমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোছাইন জানান, বিচারকের আদেশ প্রাপ্তির পর ফিঙে লিটনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের সিডিআর মতে তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। অন্যান্য যেসব মামলার কথা শোনা যায় সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় তার বিরুদ্ধে অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।