বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। সবজি, মাছ, মাংস ও মুদি পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। সব ধরনের পণ্যের দাম চড়া হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ভোক্তারা। তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারে অস্থিরতা থাকলেও নিয়ন্ত্রণে নেই কার্যকর পদক্ষেপ।
শুক্রবার সকালে শহরের বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে হেরফের হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, জলাবদ্ধতা ও ভারি বৃষ্টির কারণে সবজির দাম চড়া। এদিকে, সবজির দাম চড়া থাকাতে ক্ষোভ দেখা গেছে সাধারণ খুচরা ক্রেতাদের মধ্যে। এদিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহের তুলনায় শিমের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৬০ টাকা। গেল সপ্তাহে ২৬০ থেকে ২৮০ বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা। দ্বিগুণ দাম বেড়ে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। ৩০ টাকা কেজিতে বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। ১০ টাকা কেজিতে বেড়ে পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। ৪০ টাকা কেজিতে বেড়ে ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। এছাড়াও প্রতিকেজি টমেটো ১৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১১০ টাকা, কচুরলতি ৮০ টাকা, পালংশাক ৫০ টাকা (আটি), লাল শাক ১৫ টাকা (আটি), লাউ ৮০ টাকা (পিস), রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, আলু ৫৫ টাকা, শুকনো ঝাল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, কাঁচাকলা ৬০ টাকা, গাজর ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ওল ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, আমড়া ৪০ টাকা, ক্যাপসিকাপ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, মেচড়ি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, প্রতিকেজি সিলভার ও তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, ইলিশ ৪৬০ থেকে ২১শ’ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা, ছাগলের মাংস এক হাজার থেকে ১১শ টাকা, জাত ভেদে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, মুরগির মাংস ১৬০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শহরের বড় বাজারে সবজি কিনতে আসা শংকরপুর এলাকার দিনমজুর হালিমা খাতুন বলেন, বাসা বাড়িতে কাজ করে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা মজুরি পাই। বাজারে জিনিস পাতির যে দাম তাতে ঠিকমত দুবেলা ভাত মুখে তোলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সব জিনিসের দাম আগুন। এত দামে বাজার করে খাওয়া সম্ভব না।
রিকসা চালক আনসার আলী বলেন, সারাদির রিকসা চালিয়ে ৫০০টাকা আয় করেছি। রিকসা মালিককে দিতে হবে ২৫০ টাকা। বাকি টাকায় বাজার করতে হবে। শুধু এক পোয়া ঝাল কিনেছি। এখনও তরকারি, চাল কিনতে হবে।
মোহাম্মদ হৃদয় নামে বিমান অফিস এলাকার একজন ক্রেতা বলেন, অবস্থা খুব শোষনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। দিন মজুরির কাজ করি। আজ ৪ দিন কাজ বন্ধ। কি করে বাজার করে খাব। বাজারে এক হাজার টাকা আনলে প্যাকেট ভরে না। আগে এক কেজি কিনতাম এখন ২৫০ গ্রাম কিনছি। এভাবে চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
বিক্রেতা ফাহিম ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকাল টানে বাজার হয়ে যায়। সকালে টাটকা জিনিস পাওয়া যায় তাই দমি একটু বেশি থাকে। বাজারে জিনিসের দাম বেড়েছে। মোকামে সবজি কম পাওয়া যাচ্ছে। সবজির ক্ষেত পানিতে নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে দাম বাড়তি।
বিশ^জিৎ নামে অন্য এক বিক্রেতা বলেন, আমদানি বাড়লে সবজির দাম বাড়ে। এখন সবজির দাম বাড়ার কারণ আমদানি কমেছে। অনেক ছোট ছোট দোকানদার সবজির অভাবে দোকান বসাতে পারেনি।