কালীগঞ্জ সংবাদদাতা
সামাজিক বিরোধের জের ধরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার কোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানায়, সামাজিক বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান তুফানের নেতৃত্বে স্থানীয় কোলাবাজারের বিএনপি নেতা তালিয়ান গ্রামের বাবলুর রহমানের ফার্নিচারের দোকানে হামলা চালায়। এ সময় তারা রামদা ও দেশীয় অস্ত্রপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে বাবলুর রহমান ও তার ভাইপো আফাঙ্গীরকে জখম করে। এ সময় এলাকাবাসী হামলা করতে আসা ছাত্রদল নেতা তুফানের ছোট ভাই শান্তসহ কয়েকজন মারধর করেন। এ ঘটনার জের ধরে কোলাবাজারে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে সন্ত্রাসীদের আটকের দাবি করা হয়। এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেয় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বনি। এরপর ঘটনাস্থলে যায় যৌথবাহিনী। পুনরায় সকালে কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
কোলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিল করায় ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও ৫ আগস্টের পর বিএনপি দাবি করা নজরুল ইসলাম মোল্যা ও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আলার নেতৃত্বে প্রায় ২৫০/৩০০ লোক আমার বাড়িতে হামলা চালায়। তাদের সবার হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এসময় একটি মোটরসাইকেল, ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর ও স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুট করা হয়। এছাড়াও যুবনেতা জলিল আহমেদের বাড়ির জানালার গ্লাস ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোলা গ্রামের এক বৃদ্ধ বলেন, শুক্রবার সকালে বনিদের বাড়িতে প্রায় ২০০/৩০০ লোক হামলা চালায়। তাদের হাতে দা ছিল। এছাড়াও আরো কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। যারা এসেছিল তারা অন্য ইউনিয়নের মানুষ। এক ইউনিয়নের মানুষ অন্য ইউনিয়নে এসে হামলা চালাচ্ছে। এ সময় বাজারে পুলিশ ছিল।
ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বনির মা শেখা খাতুন বলেন, অনেক মানুষ অতর্কিত হামলা চালায় আমাদের বাড়িতে। এ সময় তার স্বামী ও দুই ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের সময়ও স্বামী-সন্তানদের পালিয়ে থাকতে হয়েছে আবার এখনো পালাতে হচ্ছে। এর থেকে আমাদের মরে যাওয়া উচিৎ।
এ ব্যাপারে জানতে নজরুল ইসলাম মোল্লার মোবাইলে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার প্রথমে ভাংচুর করার কথা জানতেন না বলেন জানান। পরে জানান, এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।