বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের উপর দিয়ে ফের বয়ে যাচ্ছে মাঝারি তাপপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার যা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে গরমের তীব্রতাও বেড়েছে। তীব্র রোদের প্রচণ্ড প্রখরতায় মানুষ ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছে। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষেরা ঘরের বাইরে বের হলেও ছায়াযুক্ত জায়গায় বিশ্রাম নিচ্ছেন তারা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ কয়েকদিন অব্যহত থাকতে পারে। গরম ও আর্দ্রতার সংমিশ্রণে বাড়বে গরমের অনুভূতি ও অস্বস্তি। এদিকে দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কিছুটা কম থাকবে। তবে আকাশে মেঘ দেখা দিলেও বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই।
এদিকে, যশোরে মাঝারি তাপপ্রবাহে গোটা প্রাণ-প্রকৃতি দগ্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দুপুরের দিকে রাস্তা-ঘাট, ফসলের ক্ষেতে মরুর উত্তাপ বিরাজ করছে। ঘরের বাইরে বের হলেই যেন আগুনের হল্কা গায়ে লাগছে। শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সূর্যের তাপ এতই বেশি যে, খোলা আকাশের নিচে হাঁটলেও গরম বাতাসে শরীর যেন ঝলসে যাচ্ছে। যাত্রাপথে ছাতা মাথায় দিয়ে তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকেই। স্বস্তি পেতে শ্রমজীবী মানুষ রাস্তার পাশে বিশ্রাম নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ হাতে মুখে পানি দিয়ে ঠাণ্ডা হওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউবা শরবত, আখের রস, স্যালাইন পানিতে শরীর শীতল করার চেষ্টা করছেন।
শহরের মুজিব সড়কে পেয়ারা বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। পেয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না। একদিকে ঝলসানো রোদ আর পিচের তাপের আঁচে মুখ পুড়ে যাচ্ছে। কি আর করা, কাঁচা মাল বিক্রি না করলে পঁচে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে বেঁচাকেনা করছি। পেটও তো চালানো লাগবে।’
যশোর শহরের রায়পাড়া এলাকার রিকশাচালক জিহাদ আলী বলেন, প্রচণ্ড গরমে গায়ে যেন আগুনের ধাক্কা লাগছে। একটু রিকশা চালালেই ঘামে গা ভিজে যাচ্ছে। গরমে মাথা ঘুরে উঠছে। রিকশাচালক হোসেন মিয়া বলেন, গরমে রিকশা চালালে গায়ে যেন আগুনের ছ্যাঁকা লাগছে। তারপরও রিকশা চালাতে হচ্ছে। কিন্তু ঠিকমতো ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। গরমে মানুষ বাইরে কম আসছে। চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বিপাকে পড়া শ্রমজীবী মানুষ তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে মাথায় টুপি অথবা গামছা পরে চলাচল করছেন। কৃষিকাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা ক্লান্ত দেহে ছায়ায় বিশ্রাম করছেন। গরমের হাত থেকে শরীর শীতল করে জুড়িয়ে নিতে শহর থেকে কিশোর-যুবকরা দল বেঁধে ছুটছেন গ্রামাঞ্চলে নলকূপগুলোতে গোসল করতে।