বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর পৌর যুবদলের এক নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি তারেক হোসেন চুন্নু ও নগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবিতে এক নারীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। চাঁদার তিন লাখ টাকা না পেয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। এ সময় তারা শ্লীলতাহানিও ঘটিয়েছেন।
রোবাবর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড এলাকার বাসিন্দা জেসমিন বেগম।
তবে অভিযুক্তদের দাবি, মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ওই নারী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছিল। এজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।
লিখিত বক্তব্যে জেসমিন বেগম বলেন, আমার জীবিকার একমাত্র ভরসা চারটি ইজিবাইক। যা ভাড়া দিয়ে সংসাকার চালাই। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে আমার ব্যবসার দিকে নজর পড়ে চুন্নুর। কিছুদিন পর সে আমার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় চুন্নু ও তার সহযোগীরা আমাকে বারবার হুমকি দিতে থাকে। গত ৪ আগস্ট বিকেলে শহরের বৌবাজার এলাকার চুন্নু, বিশাল, আকাশ, লাল্টু, সোহেল ওরফে চাকু সোহেল, শফিক, হাসান, সনু, মন্ডল, হাবিব, তুষার, আল আমিনসহ আরও ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আামর বাড়িতে হামলা চালায়। তারা আমার ঘরে ঢুকে দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় আমাকে বেধড়ক মারধর করে। সানু ও লাল্টু আমার শ্লীলতাহানি ঘটায়। এসময় চুন্নু ঘর তল্লাশি করে আমার ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। আমার ছেলে রাকিব হাসানকে মারধর করে আহত করে। আমরা মাত্র ১১ মাস বয়সী শিশুর গলায় চাকু ধরে অবশিষ্ট টাকা দিতে বলে। আমার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে অনেকে পালিয়ে যায়। তবে চুন্নুসহ কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। পরে কিছু দুর্বৃত্ত এসে চাকুর ভয় দেখিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
কিছু সময় পর চুন্নুর নেতৃত্বে আরও ৩০-৪০জন আবার আমার বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়। সাথে বস্তি এলাকা থেকে ৩০ জন নারী এনে আমার বাড়ি ঘিরে ফেলে। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। আমি ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। পরে কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দিতে গেলে প্রথমে তারা অভিযোগ নিতে চাননি। পরে অভিযোগ নিলেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ফোনটি ফেরত পাই। বর্তমানে আমি শিশু সন্তান নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। চাঁদাবাজ চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে যশোর পৌর যুবদলের এক নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি তারেক হোসেন চুন্নু বলেন, ওই নারী ইজিবাইক ভাড়া দেন। তার ইজিবাইক ভাড়ায় চালাতেন একজন। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওই ড্রাইভারকে ২৭শ’ টাকা জরিমানা করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। মীমাংসার জন্য ওই নারী আমাকে ডাকেন। আমরা সেখানে গিয়ে দেখি ওই নারী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এম তমাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলের নির্দেশনা রয়েছে, দলের পদ পদবী নিয়ে কেউ অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। সে যত বড় নেতা হোক না কেন।’
কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’