বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের শার্শা উপজেলার ৭ নং কায়বা ইউনিয়নের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ওলিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে এক নারীর কাছ থেকে সালিশ মীমাংসার নামে ৫০ হাজার টাকা ও ভিডব্লিউবি কার্ড দেয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির অপর একটি পক্ষ বলছে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তার (ওলিয়ার রহমানকে) এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানো উচিত হয়নি। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। অনেকেই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নাধীন পাড়ের কায়বা গ্রামের তাসলিমা খাতুন (ছদ্ম নাম) এক নারীকে জিম্মি করে কিছু ব্যক্তি সাড়ে তিন লাখ টাকার একটি চেক জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেয়। পরে ওই নারী সাংগঠনিক সম্পাদক ওলিয়ার রহমানকে জানালে ওলিয়ার রহমান ওই নারীকে শার্শা থানায় অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। থানায় অভিযোগ দেয়ার পর পুলিশ অভিযুক্তদের কাছ থেকে ওই নারীর স্বাক্ষরিত সাড়ে তিন লাখ টাকার চেকটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে থানা থেকে চেকটি আনতে টাকা লাগবে বলে সাংগঠনিক সম্পাদক ওলিয়ার রহমান ওই নারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন বলে দাবি ভুক্তভোগী নারীর।
অপরদিকে কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এমন নারীদেরকে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভিডব্লিউ-বি কার্ড দেয়ার ঘোষণা দেয় শার্শা উপজেলা প্রশাসন। ওই কার্ড দেয়ার নাম করেও একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচশ’ টাকা করে নেন ওলিয়ার রহমান। এবং তিনি যে সব ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা দিয়েছেন সেগুলো কৌশলে ভিডিও করে কে বা কারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও ওলিয়ার রহমান যেসব ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন সে সকল ব্যক্তির বক্তব্যের ভিডিও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছেও পাঠানো হয়েছে। সেগুলো সংরক্ষিত আছে। এ ব্যাপারে কায়বা ইউনিয়ন বিএনপি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ওলিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ৬/৭ মাস আগে অভিযোগকারী ওই নারীর কাছ থেকে জোরপূর্বক সাড়ে তিন লাখ টাকার একটি চেক স্বাক্ষর করে নিয়েছিল গ্রামের কিছু ব্যক্তি। পরে তিনি আমাকে জানালে আমি থানায় অভিযোগ দিতে বলি। অভিযোগের পর পুলিশ চেকটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আমি কোন টাকা নিইনি, তবে’ পুলিশের সাথে কিছু টাকার লেনদেন হতে পারে বলে দাবি ওলিয়ার রহমানের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের শালিস বিচার কিংবা সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন কার্ড নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরেও কেউ এসব কাজে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।