শরণখোলা সংবাদদাতা
সুন্দরবনে নিখোঁজের প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর পর্যটক মাহিদ আব্দুল্লাহর (১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার বিকেল ৩টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রে ডিমের চরের নদীতে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কচিখালী ডিমের চরে নদীতে নেমে মা-বাবার সাথে সাঁতার কাটার সময় স্রোতে ভেসে যায় আব্দুল্লাহ। পরে কোস্ট গার্ডের ডুবুরি দল ও বন বিভাগের সদস্যরা তল্লাশি অভিযান শুরু করেন।
পরিবার সূত্র জানায়, মৃত মাহিদ আব্দুল্লাহ ঢাকার মিরপুর ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডা. শেখ সুলতান মাহামুদ আসাদের ছেলে। তারা মুহাম্মদপুর শেখেরটেকের বাসিন্দা। ডা. সুলতান মাহামুদ তার স্ত্রী ও চার ছেলেসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মোট ৭৫ জনের একটি পর্যটক দল এমভি দ্য এক্সপ্লোরার নামের একটি জাহাজে সুন্দরবন ভ্রমণে এসেছিলেন। শরণখোলা রেঞ্জের কটকা, কচিখালী, ডিমের চরসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের কথা ছিল তাদের।
কিন্তু দুর্ঘটনায় তাদের সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। ভ্রমণ স্থগিত করে সবাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
পর্যটক দলের সদস্য মো. আল আমীন রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মোবাইল ফোনে জানান, দুর্ঘটনায় তারা সবাই শোকাহত। তারা ভ্রমণ স্থগিত করেছেন।
নিখোঁজ আব্দুল্লাহর মা, তিন ভাইকে নিয়ে তারা সবাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। ঘটনাস্থলে শুধু আব্দুল্লাহর বাবা, তার এক বন্ধু এবং জাহাজের দুজন স্টাফ রয়েছেন।
পর্যটক আল আমীন জানান, ছেলেকে হারিয়ে মা লিমা বেগম জাহাজের কেবিনের দরজা বন্ধ করে শুধু কান্না করছেন। অন্য পর্যটকরাও শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন। আনন্দ উপভোগের জন্য ভ্রমণে এসে এখন সবাইকে শোকের বোঝা মাথায় নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, বিকেল ৩টার দিকে ডিমের চরের ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দক্ষিণে কিশোরের মরদেহটি ভেসে ওঠে। নদীতে মাছ ধরারত জেলেরা দেখে উদ্ধারকারীদের খবর দেন। পরে কোস্ট গার্ড ও বন বিভাগের কর্মীরা মরদেহটি উদ্ধার করেন।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নিখোঁজ কিশোর পর্যটকের মরদেহটি উদ্ধার হয়েছে। মরদেহ কোস্ট গার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কোস্ট গার্ড এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলা সদরদপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা কিশোরের মরদেহটি নিয়ে মোংলা সদরদপ্তরে রওনা হয়েছেন। এখানে আনার পরে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।