বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিসিবির সাবেক পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর ক্রীড়া সংস্থার অডহক কমিটির সদস্য করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ক্রীড়া সংগঠকরা। প্রতিবাদে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও ও স্মারকলিপি কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়রা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি থেকে কাজী ইনামকে বাদ দেয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। কর্মসূচি থেকে নেতৃবৃন্দ আগামীকাল বুধবার যশোর স্টেডিয়ামে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা দেন। একই সাথে হুশিয়ারি দেন অনতিবিলম্বে কাজী ইনাম আহমেদকে অপসারণ না করলে যশোরের ক্রীড়াঙ্গনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার।
নেতৃবৃন্দ জানান, ছাত্র-জনতার অভুত্থানে সরকার পতনের পর দেশের সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি করার নির্দেশনা দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এ ঘোষণার প্রায় ছয় মাস পর ৭ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ৯ সদস্যের নতুন অ্যাডহক কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া অফিসারকে সদস্যসচিব রেখে কমিটির সদস্য করা হয়েছে জেডিএসএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকউজ্জামান, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও জেডিএসএ’র সাবেক সহসভাপতি এজেডএম সালেক, ক্রীড়া সংগঠক কাজী ইনাম আহমেদ, এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুহম্মদ বুরহান উদ্দিন, ছাত্র প্রতিনিধি সামিউল আলম শিমুল ও ক্রীড়া সাংবাদিক মাসুদ রানা বাবুকে। অ্যাডহক কমিটি গঠনের আট মাস পর ক্রীড়া সংগঠক শ্রীনিবাস হালদারের স্থলে বিসিবির সাবেক পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের ভাই। শেখ হাসিনা সরকার আমলে এমপি ভাইয়ের তদ্বিরে যশোরের প্রতিনিধি হয়ে পরপর দুই মেয়াদে বিসিবির পরিচালকের দায়িত্ব পান তিনি। নতুন কমিটি জানাজানি হওয়ার পর কমিটি থেকে তার নাম বাদ দেয়ার দাবি উঠেছে। যশোরের খেলাধুলার সাথে কখনও সম্পৃক্ত ছিলেন না কাজী ইনাম আহমেদ। তাকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যশোরের ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকদের কেউ কেউ। আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে ভোটার হওয়ার সুযোগ নিতেই ইনাম ‘বিশেষ উপায়ে’ অ্যাডহক কমিটির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্য ছাড়া কেউ বিসিবি’র প্রতিনিধি হতে পারবেন না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক জাতীয় ফুটবলার সৈয়দ মাশুক মো. সাথী, জেলা দলের সাবেক ক্রিকেটার মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, মোস্তাক নাসির টনি, খান শফিক মো. রতন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা আখিরুজ্জামান সান্টু, সোনালী অতীত ক্লাবের সভাপতি এ বি এম আখতারুজ্জামান, ক্রীড়া সংগঠক হিমাদ্রী সাহা মনি, শহিদ হোসেন লাল বাবু প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।