বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর আইনজীবী সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় ৪ সদস্যকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। বহিস্কৃতরা হলেন, সমিতির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আব্দুল মুকিত। বহিস্কৃত সদস্যদের বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার না হওয়ায় পর্যন্ত আদালতের সকল কার্যক্রম থেকে বিরতি থাকতে বলা হয়েছে। বুধবার সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের শোকজ জবাবের শুনানি শেষে সর্ব সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিস্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর।
অভিযোগে জানা গেছে, যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেন জনি কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় মা ও স্ত্রীর একটি জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান টুটুল। জমি রেজিস্ট্রির আগে সমুদয় টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সুচতুর জনি রেজিস্ট্রর আগে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। পরবর্তীতে টুটুল বহু দেনদরবার করে আরও ১৭ লাখ টাকা আদায় করেন জনির কাছ থেকে। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে টুটুলকে হুমকি দিতে থাকেন আইনজীবী জনি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে টুটুল পাওনা টাকা আদায়ে আইনজীবী সমিতিতে জনির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। সমিতর সভায় অভিযোগের উপর আলোচনা শেষে সমিতির সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাসকে আহবায়ক ও আরএম মঈনুল হক খান ময়নাকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি বাদী ও বিবাদীদের বক্তব্য গ্রহণ করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সৈয়দ কবির হোসেন জনিকে অভিযুক্ত করে সমিতিতে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটি। বুধবার সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের উপর শুনানি শেষে সৈয়দ কবির হোসেন জনিকে শো-কজ করা হয়েছিল। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জনিকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
অপরদিকে, অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিলেন যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে। ২০১৯ সাল থেকে ২২ সাল পর্যন্ত আব্দুল রাজ্জাক ৮ চেকের মামলা পরিচালনা করেছিলেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর ৮ টি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫শ’ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আব্দর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থকেন। একপর্যায়ে চলতি বছরের ৪ জুন আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং কর্পোরেশনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওহাব গত ২৮ জুলাই যশোর আইনজীবী সমিতির সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সদস্য আব্দুর রাজ্জাকে শো-কজ করেছে আইনজীবী সমিতি। শো-কজের জবাব সন্তোষ জনক না হওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তার সহকর্মীর সাথে অসাদাচারণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন করায় এ দুইজনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে সৈয়দ কবির হোসেন জনি বলেন, ‘বহিস্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে; সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তার পরেও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির উর্দ্ধে নয়।’
শিরোনাম:
- যশোর আইনজীবী সমিতির ৪ সদস্য সাময়িক বহিস্কার
- সেবার মান উন্নয়ন সভায় আড়াই ঘন্টা চিকিৎসকেরা, রোগীদের চরম ভোগান্তি
- চৌগাছার তিন দুর্বৃত্ত বিএনপির কর্মী নন : বিবৃতি
- দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানের নির্যাতনে বিপাকে পল্লী চিকিৎসক
- ভৈরব নদ সংস্কার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি
- শরণখোলায় শিশু সুরক্ষায় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন সভা অনুষ্ঠিত
- ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না দিলে দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা রাজপথে নামতে বাধ্য হবে’
- ডাক্তারদেরকে মানবিক ডাক্তার হওয়ার আহ্বান ডা. ফরিদের