বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে যশোরের পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) রওনক জাহান। তিনি বলেন, পূজাকে কেন্দ্র করে যদি কেউ অপপ্রচার, গুজব ছড়ানো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানি কিংবা সরাসরি পূজামণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসপি রওনক জাহান জানান, যশোর জেলার ৭০৬টি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিতে চারটি সেক্টরে স্ট্রাইকিং টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি থানায় বিশেষ টিম থাকবে, পাশাপাশি ৪০টি মোবাইল টিম ও ১৭২টি মোটরসাইকেল টিম মাঠে থাকবে। চলবে নিয়মিত তল্লাশি। পূজা উদযাপন পরিষদ ও স্থানীয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশ কাজ করবে।
তিনি বলেন, অনেক সময় ছোটখাটো ঘটনা ধর্মীয় বিষয় হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে, যা মুহূর্তের মধ্যে দেশব্যাপী গুজবে রূপ নেয়। এসব গুজব ঠেকাতে জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম টিম সর্বদা মাঠে থাকবে। তারা ২৪ ঘন্টা সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবে।
এসপি আরও জানান, পূজামণ্ডপগুলোকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মন্দিরকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সদর উপজেলায় পাঁচটি পূজামণ্ডপে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যেখানে মানুষের সমাগম বেশি হয়। এছাড়া পূজা উদযাপন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট কমিটিকে সরকারি নির্দেশনা মেনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে স্বচ্ছলদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে এ ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। একই সাথে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি মাদক রুখতে পুলিশের পাশাপাশি প্রত্যেককে এগিয়ে আসার আহবান জানান। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য ইউনিটের সাথেও তাদের কথা হয়েছে বলে জানান।
মতবিনিময় সভায় জেলা পুলিশের সাম্প্রতিক সাফল্যও তুলে ধরেন এসপি রওনক জাহান। তিনি মণিরামপুর থানায় বাবার হাতে মেয়েকে হত্যা মামলার দ্রুত তদন্ত ও আসামি আটক, সম্প্রতি ডাকাত আটক ও মালামাল উদ্ধার, ছিনতাইকারী আটকসহ বিভিন্ন অভিযানের সাফল্য এবং মামলা নিস্পত্তি ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরার অগ্রগতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
পরিশেষে তিনি বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির অপচেষ্টা কঠোর হাতে প্রতিহত করা হবে এবং অপরাধীর ধর্ম বা বর্ণ বিবেচনা না করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি সকলের প্রতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রেখে সরকারি নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার। আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) আহসান হাবিব, ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভুঞা, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।