বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যশোরে ছয়টি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি। আজ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তারেক রহমান ছাড়াও দলটির নীতিনিধারণী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এদিকে, জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের ফোন ও খুদে বার্তার মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনেকেই ইতিমধ্যে ঢাকায় রওনা হয়েছেন, অন্যরা আজ দুপুরের মধ্যে পৌঁছাবেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, এর আগে দলের মহাসচিব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডেকে স্থানীয় গ্রুপিং বিশৃঙ্খলা মেটানোর তাগিদ দিয়েছিলেন।
সেই গ্রুপিং সেই নির্দেশনায় কাজ না হওয়ায় এবার কঠোর বার্তা দিতেই ডেকেছে তারেক রহমান।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রতিটি বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করছেন। সেই ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবেই জেলার মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। সেখানে দলের পরবর্তী কর্মপন্থা ও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন তিনি।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘এর আগে গত সেপ্টেম্বরে যশোরের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকেন দলের মহাসচিব। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডেকে এলাকায় গ্রুপিং ভুলে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এবার আগামীর নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলে ঐক্য ফেরাতে ও ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে দিকনির্দেশনা দিবেন।’
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনটি দীর্ঘদিন জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীকে ছাড় দিয়ে আসছিল বিএনপি। চারটি নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীই এ আসনে জোটের মনোনয়ন পেয়েছেন। একবার বিজয়ীও হয়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে কোনো জোটকে ছাড় নয়, নিজ দলের প্রার্থীর মনোনয়ন দেখতে চান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সেই হিসাবে মনোনয়ন লড়াইয়ে নেমেছেন অন্তত পাঁচ প্রার্থী। প্রার্থী জট কমিয়ে বিএনপি সেই আধিপত্য নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে প্রার্থীতা সংক্ষিপ্ত করবে আজ।
এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপি নেতা ও যশোর চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাকে ডাকা হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে ঢাকাতে রয়েছি। এর আগেও ডেকছে। দল তৃণমূলে কাজ করার নির্দেশনা দেন। যদিও আমি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করছি। আগামী ভোটে প্রার্থী যেই হোক, সমন্বিত কাজ করার নির্দেশনা দিবেন তারেক রহমান এমনটা ধারণা করছি।’
যশোর-৫ (মণিরামপুর) সংসদীয় আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। একাধিক গ্রুপে বিভক্ত প্রার্থীরা মনোনয়ন লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপির সাবেক মিত্র জামায়াত এবার একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেই জোর কদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পিছিয়ে নেই জমিয়তে উলামা ইসলামের প্রার্থীও। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নে এগিয়ে থাকা সাবেক সভাপতি মো. মুছা সম্প্রতি মারা গেছেন। ফলে প্রার্থী জটের হিসাব বদলে গেছে। এই আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নি। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব। আরও অনেকে মনোনয়ন চাইবে, দল যাকে মনোনীত করবে, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করব। নির্বাচন এলে বিভেদ থাকবে না।’
একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত শার্শা উপজেলা। আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। আগের ১২টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নয়বার, বিএনপি তিনবার এবং জামায়াতে ইসলামী একবার এই আসন থেকে জয়লাভ করে। এই আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির তৎকালীন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, ‘আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। আসনটির তৃণমূলে মানুষের সঙ্গে কাজ করছি। বিগত স্বৈরাচার আমলেও নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি।’

