কেশবপুর পৌর সংবাদদাতা
যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আসাদুজ্জামান শিমুলের বিরুদ্ধে পরিষদের প্রশাসকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনাটি ঘটে। সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের বাঁশবাড়িয়া-রঘুরামপুর ওয়ার্ডের মেম্বার আসাদুজ্জামান শিমুল পরিষদের প্রশাসক সাইদুল হকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এক ব্যক্তিকে নাগরিক সনদপত্র দিয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই ইউপি মেম্বারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে জুয়েল পরিষদে সোমবার নাগরিক সনদপত্র আনতে গেলে তার নামে একটি সনদপত্র প্রস্তুত করা হয়। পরে প্রশাসকের স্বাক্ষরের জন্য তার ওয়ার্ডের মেম্বার আসাদুজ্জামান শিমুলের কাছে সহযোগিতার জন্য গেলে তিনি বলেন ‘প্রশাসকের স্বাক্ষর করা লাগবে না, আমি প্রশাসকের স্বাক্ষর করে দিচ্ছি’। এরপর তিনি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের নামে জাল স্বাক্ষর করে নাগরিক সনদপত্রটি প্রদান করেন। সনদপত্রটি নিয়ে বাড়িতে ফিরলে জুয়েলের স্ত্রী মুসলিমা খাতুনের সনদপত্র দেখে সন্দেহ হলে তিনি প্রশাসকের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে পরিষদের প্রশাসকের কাছে আসলে স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হয়। প্রশাসক ওই নাগরিক সনদপত্র পরিবর্তনের পরামর্শ দেন। এদিকে স্বামীর নাগরিক সনদপত্রে জাল স্বাক্ষর এবং হয়রানির জন্য ওই মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মুসলিমা খাতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি মেম্বার আসাদুজ্জামান শিমুল বলেন, ‘তার গ্রামের জুয়েল পরিষদে এসে নাগরিক সনদপত্রে প্রশাসকের স্বাক্ষর নেয়ার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। জুয়েল বাইরে কাজে যাবে এজন্য একটা ব্যবস্থা করে দিতে বলায় ও অনেক জোরাজুরি করায় আমি সরল বিশ্বাসে তার উপকারের জন্য প্রশাসকের স্বাক্ষর করে দিই। পরে বুঝতে পারি এটা আমার অনেক বড় ভুল হয়েছে’।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা প্রাইমারি এডুকেশন ট্রেনিং সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর সাইদুল হক বলেন, নাগরিক সনদপত্র নিতে জুয়েল যে সময় পরিষদে এসেছিল তখন আমি উপজেলা প্রাইমারি এডুকেশন ট্রেনিং সেন্টারে ছিলাম। জুয়েল ও তার স্ত্রী আমার কাছে নাগরিক সনদপত্র আনলে সেখানে দেখি আগে থেকেই স্বাক্ষর করা; যেটি আমার না। তাদের কাছে জানতে পারি, মেম্বার আসাদুজ্জামান শিমুল আমার স্বাক্ষর নকল করেছেন। পরে তাদেরকে নতুন করে সনদপত্র প্রস্তুত করতে বলেছি। স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ওই মেম্বার কাজটি সঠিক করেননি, এটি একটি বড় অপরাধ।
মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তারা অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করার পর ওই মেম্বারকে সাত কর্ম দিবসের ভেতর কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ পেয়ে ওই ইউপি মেম্বারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

