চৌগাছা সংবাদদাতা
যশোরের চৌগাছায় সেচ প্রকল্পের ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক পড়েছে। ক্ষতির মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে কৃষকরা দিচ্ছেন ক্ষতিপূরণের টাকা। সংঘবদ্ধ চোর চক্র গত ৫ মাসে উপজেলার সেচ প্রকল্পে ব্যবহৃত গভীর নলকূপের প্রায় ৩০টি ট্রান্সফরমার চুরি করেছে, আর সেচের মাধ্যমে চাষাবাদের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে ক্ষতিপূরণের অর্থ জমা দিয়ে কৃষকদের পুনরায় নিতে হচ্ছে নতুন ট্রান্সফরমার। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে এখন বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক।
যশোর-২ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি চৌগাছা জোনাল অফিস ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) অফিস সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ মাসে কৃষকের সেচ কাজে ব্যবহৃত প্রায় ৩০টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২১ লাখ টাকা। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। চুরি ঠেকানো না গেলে আগামী ইরি মৌসুমের ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। উপজেলার যাত্রপুর গ্রামের রায়হান উদ্দীন (৫৫) বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সেচ প্রকল্পের আওতায় আমি একটি অগভীর নলকূপ চালায়। চারদিকে ট্রান্সফরমার চুরির খবরে পাহারা বসিয়েছিলাম। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। কয়েকদিন আগে রাতে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে ৩টি ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে গেছে চোরচক্র। এর আগে গত ২ নভেম্বর উপজেলার মাজালি গ্রামের রবিউল ইসলামের (৫২), ১টি ট্রান্সফরমার খুলেনিয়ে গেছে চোরচক্র। যার জন্য তাকে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে ১টি ট্রান্সফরমার কিনতে হয়েছে। তা টেস্ট করাতে খরচ হয়েছে ১১৫০ টাকা।
ডিসি আরসি ফি ১০০০ টাকা গুণতে হয়েছে। ১০ই অক্টোবর পাশাপোল ইউনিয়নের বড়কুলি গ্রামের আহসান হাবিবের (৫৭) গভীর নলকুপের ৩টি ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে গেছে চোরচক্র। ৭ সেপ্টেম্বর সিংহঝুলী ইউনিয়নের জামালতা গ্রামের গভীর নলকূপে ব্যবহৃত ৩টি ট্রান্সফরমার চুরি করা হয়েছে। এছাড়া গত জুলাই থেকে আগস্ট মাসে ৯টি ট্রান্সফরমার চুরির তথ্য পাওয়া গেছে। চুরির এসব ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে কৃষক আশাদুল ইসলাম (৪৪) বলেন, আমি বিএডিসির একটি গভীর নলকূপ পরিচালনা করি। কিন্তু চারদিকে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেই চলছে। এ ব্যাপারে কৃষকরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

