বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশ থেকে প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করা হবে।
মঙ্গলবার রাতে যশোর শহরের একটি অভিজাত হোটেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন তিনি। এই সভার আয়োজন করে প্রেসক্লাব যশোর। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রেসক্লাব যশোরের একজন সদস্য।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলে তরিকুল ইসলামের সন্তান হিসেবে, আপনাদের ভাই হিসেবে আমি এমন কোনো কাজ করবো না যাতে মাথা হেট হয়ে যায়।’
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থানই ছিল যশোরের রাজনীতির ঐতিহ্য। বিগত দেড় দশকে সেই ঐহিত্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। বিজয়ী হতে পারলে সেই ঐহিত্য পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ ও উন্নত যশোর উপহার দেওয়া হবে আমার প্রাথমিক দায়িত্ব।
সভায় আগামী নির্বাচনে প্রার্থীদের ঝুঁকির বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন সাংবাদিকেরা। জবাবে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘আমি স্রষ্টায় বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি তিনি যা কপালে লিখবেন তাই হবে। আর রাজনীতি মানেই হলো ঝুঁঁকি। বিগত ১৬ বছর আমিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা চরম ঝুঁকি নিয়েই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে রাজপথে থেকেছি। এখন নির্বাচনের সময় এসে সেই বিষয় নিয়ে ভাবলে হবে না। শুধু আপনারা দোয়া করবেন।’
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলে যশোর উন্নয়নে বেশ কিছু কাজের প্রতি বিশেষ মনোযোগী হওয়ার জন্য সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
একই সাথে প্রেসক্লাব যশোরের সদস্য হিসেবে যশোরের সাংবাদিকরা তার প্রতি আন্তরিক থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। জবাবে নিজের বক্তব্যের শুরুতে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোরের সাংবাদিকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যশোরের সাংবাদিকরা বিএনপিকে যেভাবে সমর্থন যুগিয়েছেন সে কারণে তাদেরকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ একাদশ নির্বাচনে আমি যখন ফ্যাসিস্ট বাহিনী দ্বারা বারবার আক্রান্ত হচ্ছিলাম, আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল তখন সাংবাদিকরা ছাঁয়ার মতো আমার সাথে থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন সে কারণে।’ অমিত বলেন, ‘যশোরের সাংবাদিকদের কাছে আমার ঋণ অনেক। আমি সেই দিনের কথা ভুলে যাইনি যখন শীতের রাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাংচুর হচ্ছিল, আক্রান্ত হচ্ছিলেন নেতারা তখন যশোরের সাংবাদিকরা গভীর রাতে শীত উপেক্ষা করে ঘটনাস্থলে ছুটে যেয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।’ তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন আমি আপনাদের প্রতিনিধি, জনগণের প্রতিনিধি তাহলে অতীতের মতো এবারও আপনারা আমার পাশে থাকবেন বলেই বিশ্বাস করি।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মো. ইসহক, অ্যাডভোকেট জাফর সাদিক, গোলাম রেজা দুলু, লোকসমাজের প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, যশোর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম, নগর সভাপতি চৌধুরী রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চাঁদ, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আঞ্জারুল হক খোকন।
সাংবাদিকদের মধ্যে আলোচনা করেন যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ দিনু আহমেদ, লোকসমাজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবির নান্টু, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান কবীর প্রমুখ।

