বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের কেশবপুরের বেলকাটির গুচ্ছগ্রামে বসবাস করা আলমগীর হোসেনের জীবন ছিল দারিদ্র্যের এক কঠিন লড়াই। ১৮ বছর ধরে অন্যের হোটেলে কাজ করে মিষ্টি তৈরিতে দক্ষতা অর্জন করলেও নিজের ব্যবসা শুরু করার মতো সামর্থ ছিল না তার। তবে এবার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেয়েছে। আস-সুন্নাহ ফাউণ্ডেশনের সহযোগিতায় তিনি পেয়েছেন নিজের একটি মিষ্টির দোকান।

আলমগীর হোসেন কালোজাম, চমচম, রাজভোগ, রসমালাই, বালিশ মিষ্টি, দইসহ নানা সুস্বাদু মিষ্টি তৈরিতে পারদর্শী। এলাকাবাসীর মতে, তার হাতের মিষ্টি যেন একেকটি শিল্পকর্ম। কিন্তু চরম দারিদ্র্যের কারণে নিজস্ব একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর সুযোগ পাননি তিনি।

সম্প্রতি আস-সুন্নাহ ফাউণ্ডেশনের দক্ষতাভিত্তিক উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্পের আওতায় তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ হোটেল তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এতে রয়েছে হোটেলঘর, শোকেস, চেয়ার-টেবিলসহ মিষ্টি তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও কাঁচামাল। সব মিলিয়ে এই উদ্যোগে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

আলমগীর হোসেনের পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে। অভাবের কারণে ছেলের পড়াশোনা হয়নি, বর্তমানে সে দিনমজুরের কাজ করে। তবে নতুন এই দোকানের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের আশা দেখছেন সবাই।

আস-সুন্নাহ ফাউণ্ডেশন তাদের যাকাত তহবিলের অর্থ দিয়ে অসহায় অথচ দক্ষ মানুষদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আহমাদুল্লাহ ফেসবুকে এক পোস্টে জানান, ‘আমরা আলমগীর হোসেনকে নিয়ে আশাবাদী।

আমাদের সহায়তা এবং মিষ্টি তৈরিতে তার অসামান্য দক্ষতার সমন্বয়ে এই পরিবারটি শিগগিরই সুদিনের মুখ দেখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

আলমগীর হোসেন জানান, আস-সুন্নাহ ফাউণ্ডেশন থেকে একটি মিষ্টির দোকান পেয়েছি। আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিলো একটা নিজের দোকানের। আমার খুব ভালো লাগছে।

এই উদ্যোগের ফলে শুধু আলমগীর হোসেনই নয়, বরং তার তৈরি মিষ্টির স্বাদ পেয়ে উপকৃত হবেন এলাকার মানুষও। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা এই সব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে এমন আরও অনেক স্বপ্নবান ব্যক্তিকে সাহায্য করার সুযোগ রয়েছে সমাজের সামর্থ্যবান মানুষের।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version