বাংলার ভোর ডেস্ক
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক সংস্কারে পাশে থাকতে চায় বিশ্বব্যাংক। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বলেন, আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছি।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদের কাছে ড. ইউনূস তার সরকারের আর্থিক খাত, দুর্নীতি ও বিচার বিভাগের সংস্কারের উদ্যোগের কথা জানান এবং এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা চান।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সফরকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি আরও বলেন, সরকারের এই সংস্কার উদ্যোগে আমরা উচ্ছ্বসিত। এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক।
বাংলাদেশে সফররত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা, কর, শুল্ক, ভ্যাট, ডিজিটাইজেশন, দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংকের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার দুর্নীতি থেকে মুক্তি পেতে এবং একটি নতুন সূচনা করতে জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান বিদ্যমান ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের জন্য মাঠ প্রস্তুত করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা তিনি বলেন, দেশের সংস্কারের এখনই মোক্ষম সময়। আমার এখনই এটা শুরু করতে চাই।
অধ্যাপক ইউনূস তার সরকার এখন পর্যন্ত যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে তার রূপরেখা তুলে ধরেন। বলেন, তারা দুর্নীতি বন্ধ, শ্রম সংস্কার এবং যুব সমাজকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তার সরকার অতীতে না তাকিয়ে সামনের দিকে যেতে চায় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার শ্রম সংস্কারের ক্ষেত্রে আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করবে। এতে বাংলাদেশের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করবে।
তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য খাতে বাংলাদেশের বিশ্বব্যাপী একটি শক্ত অবস্থান হওয়া দরকার বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমরা ফিরে যেতে চাই না। এটি অতীতের একটি পাইকারি প্রত্যাখ্যান। এটি একটি পরিষ্কার স্লেট।
রাইজা বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে ড. ইউনূসের পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক এফডিআই দেশের জিডিপির মাত্র আধা শতাংশ এবং এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন।
রাইজার বলেন, বিশ্বব্যাংক কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার মানবিক সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে বলে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাক্ষাতকালে জানান।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা লাখ লাখ তরুণ-তরুণীর উপর সরকার গুরুত্ব দিতে চায় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চান।
এ সময়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি প্রধান লামিয়া মোরশেদ, ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেকটর আবদুল্লাহ সেক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।