বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে লিটন হোসেন (৩৫) নামে বিএনপির এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত লিটন হোসেন শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বুধবার নিহতের বাবা আজগর আলী বাদী হয়ে শার্শা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন, শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আজগার আলী (৩২) ও শমসের আলী (৪৫)। এছাড়াও তদন্তে সন্দিগ্ধতা এজাহারভুক্ত সামসুল হক (৫২) ও আব্দুল হক মিয়া (৫৫)। এদিকে, মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে লিটন স্থানীয় দুর্গাপুর গ্রামের বাজারে একটি চায়ের দোকানের পাশে গরুর গাড়ির উপরে শুয়েছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত সেখানে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত লিটনের উপরে হামলা করে। এ সময় লিটনকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তার স্বজনরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে লিটনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারভুক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, স্থানীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্যে নিহত লিটনের সঙ্গে স্থানীয় সেলিম, রমজান, আজগরদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় বিএনপি অনুসারী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী পোস্টার টানানো নিয়ে সেলিম-রমজানদের সাথে লিটনের মারামারি হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে দ্বন্দ্ব সংঘাত চলে আসছে। সেই জের ধরে লিটনকে হত্যা করা হতে পারে। নিহত লিটনের বাবা আজগর আলী স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আ. মমিন, সেলিম হোসেন ও রমজান আলীর সাথে আমার ছেলে লিটনের দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল । তারা এর আগেও লিটনকে কয়েকবার মারধর করেছে। ঈদের আগের দিন তর্ক-বিতর্ক ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এসবের জেরে তাকে হত্যা করা হতে পারে’।
ওসি জানান, নিহত লিটন হোসেনের বিরুদ্ধে শার্শা থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। মাদক মামলায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন জানান, নিহত লিটন বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। পূর্বশত্রুতার জেরে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।