বাগআঁচড়া সংবাদদাতা
যশোরের শার্শার দক্ষিণাঞ্চলের মাখলা, ঠেঙামারী ও গোমর বিলে এখনো ১০ ফুট পানি। এদিকে আর মাত্র এক থেকে দেড় মাস পরেই শুরু হবে ইরি- বোরো মৌসুম। কিন্তু বিলে যে পরিমাণ পানিন রয়েছে তা এ স্বল্প সময়ে নিষ্কাশন হওয়া প্রায় অসম্ভব। এতে চিন্তার ভাজ পড়েছে স্থানীয় কৃষকদের কপালে।
এ বছরের একটানা ভারি বর্ষণে এলাকার ছোট বড় ও মাঝারি সব বিল তলিয়ে রয়েছে আষাঢ় মাসের শুরু থেকে। এখন অগ্রহায়ন মাস। এমনিতেই দীর্ঘদিনেই ইছামতী নদী তার নাব্যতা হারিয়েছে। আর সেই থেকেই কপাল পুড়েছে এ অঞ্চলের চাষীদের। বিলের পানি আগের মত আর নিষ্কাশিত হতে পারেনা। উপরন্ত নদীর উজানের পানি উপজেলার রুদ্রপুর-দাউদখালী খালদিয়ে মাখলা ও সোনামুখি বিলে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। ৬ মাস ধরে বিল তলিয়ে থাকে। এর সমাধানের জন্য ৮০ র দশকে রুদ্রপুর-দাউদখালী খালের ওপর ৩ ব্যান্ডের স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়।
কিন্তু উজানের পানি রোধ করা যায়নি। এরপর ৯০ দশকে ২০ গজ দূরত্বে আরো একটি ৫ ব্যান্ডের স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়। এতে নির্মান কাজে ত্রুটি থাকায় আগের মতই উজানের পানি প্রবেশ করে মাঠ ঘাট তলিয়ে যেতে থাকে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে দাউদখালী খালের প্রবেশ মুখে বাধ দিয়ে মেশিনের সাহায্যে পানি সেচে ঠেঙামারী বিলে ধান রোপণের ব্যবস্থা করা হয়। এবছর পানির চাপ অনেক বেশি থাকায় ও অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় সেটিও সম্ভব হবেনা।
রুদ্রপুর গ্রামের চাষি সবুর আলী বলেন, ঠেঙামারী বিলে এখনো ৮ থেকে ১০ ফুট পানি রয়েছে। যে কারণে মৌসুমে ধান চাষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বাগআঁচড়া ইউনিয়ন সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, মাখলা বিলে ৪০০ একর, ঠেঙামারী বিলে ৫০০ একর ও গোমর বিলে ২০০ একর জমিতে ইরিধানের চাষ করা হয়। বিলে জলাবদ্ধতার কারণে চলতি মৌসুমে মাখলা বিলে ২০০ একর, ঠেঙামারী বিলে ২৫০ একর ও গোমর বিলে ১০০ একর জমি পতিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা পানি নিস্কাসনের জন্য গোমর বিলের মাঝখান দিয়ে খাল কেটে কলারোয়ার সোনাই নদীতে সংযোগ করার জন্য নকশা সহকারে সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বিলের পানি সোনাই নদী দিয়ে ভারতের ইছামতী নদীতে ফেললেই জলাবদ্ধতার সমাধান সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আমি বিলের মাঠ পরিদর্শন করেছি। এবং দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য অবহিত করেছি বলে তিনি জানান।